ম্যাচে শুরু থেকে আধিপত্য দেখাল বার্সেলোনা। গোলের দিক থেকে পিছিয়ে পড়লেও হাল না ছেড়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল তারা। আতলেতিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের ওপর পয়েন্টের ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল হান্সি ফ্লিকের দল।
ক্যাম্প নউয়ে মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত লা লিগার এই ম্যাচে শিরোপাধারীরা ৩-১ গোলের জয়ে মাঠ ছাড়ে। প্রথমার্ধে আলেক্স বায়েনার গোলে পিছিয়ে পড়ার পর চমৎকার দক্ষতায় সমতা ফেরান রাফিনিয়া। বিরতির পর দলকে এগিয়ে দেন দানি ওলমো, আর শেষ মুহূর্তে নিশ্চিত গোল করে জয় সিল করে দেন ফেররান তরেস।
১৫ ম্যাচ শেষে ১২ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বার্সেলোনা। তাদের চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রিয়াল মাদ্রিদ—যারা একটি ম্যাচ কম খেলেছে। অন্যদিকে সমান সংখ্যক ম্যাচে দ্বিতীয় হারের মুখোমুখি হওয়া আতলেতিকো ৩১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে। টানা ছয় ম্যাচ জয়ের পর সিমেওনের দলের জন্য এটি ছিল হতাশার রাত।
১৪ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে ভিয়ারেয়াল। ম্যাচজুড়ে দাপুটে ফুটবলে ৫৮ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৯টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার ৬টি ছিল টার্গেটে। বিপরীতে আতলেতিকো শট নেয় ৭টি, লক্ষ্যে ছিল মাত্র ২টি।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক বার্সেলোনা বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করে। ধারা বিপরীতেই ১৯তম মিনিটে প্রথম শটেই গোল করে বসে আতলেতিকো। নাহুয়েল মোলিনার দীর্ঘ পাস ধরে অফসাইড ফাঁদ এড়িয়ে বায়েনা এগিয়ে গিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন। রেফারি প্রথমে অফসাইড দিলেও ভিএআরের সিদ্ধান্তে গোল মেলে।
তবে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি সমতা ফেরাতে। ২৬তম মিনিটে পেদ্রির দারুণ থ্রু বল থেকে রাফিনিয়া এগিয়ে গিয়ে গোলরক্ষককে পাশ কাটিয়ে জালে বল পাঠান। প্রায় দুই মাস চোটে থাকার পর ফিরে এমন নৈপুণ্য দেখান তিনি।
এর দশ মিনিট পর ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ আসে পেনাল্টি থেকে, কিন্তু রবার্ট লেভানদোভস্কির শট অনেক ওপরে দিয়ে যায়। এরপরই ইয়ামালের ক্রসে তার শক্তিশালী হেড ঠেকিয়ে দেন ইয়ান ওবলাক।
প্রথমার্ধে প্রায় ৭১ শতাংশ বল দখলে রেখে ১২টি শট নেয় বার্সেলোনা, লক্ষ্যে ছিল ৩টি। এই সময়ে আতলেতিকোর একমাত্র প্রচেষ্টাই ছিল গোলটি।
বিরতির পরও আক্রমণ ধরে রাখে বার্সেলোনা। ৫২তম মিনিটে ইয়ামালের দারুণ মুভে তৈরি সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। শেষ পর্যন্ত ৬৫তম মিনিটে লেভানদোভস্কির সঙ্গে দারুণ সমন্বয়ের পর ওলমো বক্সের ভিড়ের মধ্য থেকে বাঁ পায়ের শটে বল জালে পাঠিয়ে দলকে এগিয়ে নেন। গোল করার পরই চোটে পড়ে চিকিৎসা নিতে হয় তাকে, পরে তাকে বদলি করে নামানো হয় মার্কাস র্যাশফোর্ডকে। একই সময়ে লেভানদোভস্কির জায়গায় আসেন তরেস।
৭৯তম মিনিটে সমতা ফিরিয়ে আনার বড় সুযোগ পান থিয়াগো আলমাদা। গোলরক্ষকের সঙ্গে একা অবস্থায় শট নিতে দেরি করেন তিনি, এরপর ডিফেন্ডারদের চাপে বাইরে পাঠিয়ে দেন বল।
যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে আরেকটি সুযোগ তৈরি করে আতলেতিকো, তবে অঁতোয়ান গ্রিজমানের শট লক্ষ্যে যাওয়ার আগেই বাইরে চলে যায়। এরপরই পাল্টা আক্রমণে ওবলাক র্যাশফোর্ডের শট ঠেকান।
সবশেষে ম্যাচের ৯০তম মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের পাস থেকে ছয় গজ দূরে অবহেলিত অবস্থায় বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ফেররান তরেস, নিশ্চিত করেন বার্সেলোনার জয়। আর খেলা শুরু হতেই বাজে শেষ বাঁশি।
এবার সুযোগ রিয়াল মাদ্রিদের সামনে—বুধবার আথলেতিক বিলবাওয়ের মাঠে জিততে পারলে তারা পয়েন্ট ব্যবধান কমাতে পারবে; যদিও দলটি টানা তিন ম্যাচ ধরে পয়েন্ট হারাচ্ছে।


































