দেউলিয়া হওয়ার পথে অধিকাংশ মেডিকেল সেন্টার

দেউলিয়া হওয়ার পথে অধিকাংশ মেডিকেল সেন্টার

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১১:২৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গালফ কো-অপারেটিভ কাউন্সিল (জিসিসি) অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারগুলো ফের সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জিসিসি’র কেন্দ্রীয় অফিসের সঙ্গে যোগসাজশে এক শ্রেণির অসাধু মালিক চক্র সমবণ্টনের নিয়ম ভেঙে একচেটিয়া স্বাস্থ্য পরীক্ষার স্লিপ নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে রাজধানীসহ সারাদেশের অধিকাংশ মেডিকেল সেন্টার কার্যত ভেঙে পড়েছে, বিদেশগামী শ্রমিকরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

শ্রমবাজারে ভাটার টান এবং নতুন নিয়ম নীতির কারণে যেখানে প্রতিদিন সীমিতসংখ্যক কর্মী যাচ্ছে, সেখানে প্রায় ত্রিশটি সিন্ডিকেটভুক্ত সেন্টার একচেটিয়া মেডিকেল স্লিপ তুলছে। এসব সেন্টার দিনে শত শত পরীক্ষা করলেও, সমবণ্টন থেকে বঞ্চিত মেডিকেলগুলো প্রতিদিন ৫–৭টির বেশি পরীক্ষা পাচ্ছে না। অনেক কেন্দ্র দিনে একটিও রোগী না পেয়ে ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

দি ক্ল্যাসিক মেডিকেল সেন্টারের পার্টনার মাহমুদুল হক বলেন, “জিসিসি’র সার্ভার থেকে সমবণ্টন না হওয়ায় সিন্ডিকেটভুক্ত সেন্টারগুলো একচেটিয়া সুযোগ পাচ্ছে, অথচ আমরা প্রতিদিন মাত্র দু-একটি পরীক্ষা পাচ্ছি।” ইয়াদান মেডিকেলের ম্যানেজার জানান, কমিশন না দেওয়ায় তারা পুরোপুরি বঞ্চিত। সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় তাদের মতো বহু সেন্টারের মালিক এখন ব্যবসা বিক্রি করে দেওয়ার চিন্তা করছেন।

অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা জিসিসি নির্ধারিত ৮৫০০ টাকার পরিবর্তে ২০–৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। এমনকি আনফিট শ্রমিকদেরও টাকার বিনিময়ে ফিটনেস সনদ দিয়ে বিদেশ পাঠানো হচ্ছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে অনেকে ধরা পড়ছেন, দেশে ফিরে আসছেন আর্থিক ক্ষতির বোঝা নিয়ে।

সাবেক গামকা সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, “ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস চাইলে এ সিন্ডিকেট সহজেই ভাঙতে পারে। যারা অতিরিক্ত মেডিকেল করছে তাদের তিন মাস ভিসা জমা নেওয়া বন্ধ করে দিলেই পরিস্থিতি বদলে যাবে।”

বায়রার সাবেক নেতা ফখরুল ইসলামও সতর্ক করেন, এ সিন্ডিকেট শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে না, বরং দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে। তার দাবি, বিদেশগামী কর্মীদের সুষ্ঠু মেডিকেল চেকআপ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রদূতের হস্তক্ষেপ ছাড়া কোনো কার্যকর সমাধান সম্ভব নয়।

সারসংক্ষেপ: জিসিসি অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারগুলোর ৯০ শতাংশ চেকআপ এখন মাত্র ৩০টি সিন্ডিকেটভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে। বাকিরা প্রতিদিন সামান্য পরীক্ষার সুযোগ পেয়ে দেউলিয়া হওয়ার পথে। অবৈধ অর্থ আদায়, ফিটনেসে অনিয়ম ও সার্ভার ম্যানুপুলেশনের অভিযোগ উঠেছে। মালিক ও সংশ্লিষ্টরা জরুরি ভিত্তিতে সিন্ডিকেট ভাঙা এবং সমবণ্টন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement