সাংবাদিককে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে পুলিশের মারধর ও গায়েবের হুমকি

Published : ২২:১৬, ১২ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রামে যুমনা টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ তুলেছেন রিপোর্টার জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত। তিনি দাবি করেছেন, খুলশী থানা জোনের ডিসি (উত্তর) আমিরুল ইসলাম তাকে থানার কক্ষে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে মারধর করেছেন। একপর্যায়ে তাকে গায়েব করে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে খুলশী থানায় মারধরের ঘটনা ধরা পড়ে একটি ভিডিওতে, যা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। এরপর চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকরা খুলশী থানার সামনে অবস্থান নিয়ে এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানান। পুলিশের মারধর ও হেনস্তার শিকার দুই সাংবাদিকের মধ্যে অপরজন হলেন যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন আসাদুজ্জামান লিমন।
ভিডিওতে দেখা যায়, রিপোর্টার জোবায়েদ বলেন, শনিবার নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে নিউজ কভার করার সময় তার মানিব্যাগ ও অফিস আইডি হারিয়ে গেছে। হারানো জিডি করতে তিনি খুলশী থানায় এসেছিলেন এবং সেখানে গ্রেপ্তার হওয়া পরিবারের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এই সময় ডিসি আমিরুল ইসলাম তার উপর চড়াও হয়ে তাকে থানার ভেতরে নিয়ে যায় এবং পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে মারধর করতে নির্দেশ দেন। পরে তিনি ও তার সহকর্মীকে রুমে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়।
জোবায়েদ জানান, ডিসি আমিরুল বলেন, “তুই ফ্যাসিস্ট, আমি তোকে মারিনি, শয়তানকে মেরেছি। বেশি কথা বললে একদম গায়েব করে ফেলব।” এই বিষয়ে ডিসি আমিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি।
ঘটনার পর খুলশী থানার সামনে সাংবাদিকরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার বলেন, সাংবাদিক হেনস্তা ও নির্যাতনের ঘটনায় সর্বাত্মক প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ডিসি আমিরুল ইসলানের প্রত্যাহার দাবি জানাচ্ছি। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, এই লোমহর্ষক ঘটনা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ঘটনার তদন্তে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ডিসি আমিরুলকে খুলশী জোন থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
টিভি সাংবাদিক নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক হোসেন জিয়া বলেন, এই ঘটনা পূর্বের ঘটনার পরম্পরা। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সাংবাদিকরা সব জায়গায় যাওয়া আইনত সম্ভাব্য, অথচ পুলিশ তা প্রতিহত করছে। তিনি সুষ্ঠু বিচার ও ডিসি আমিরুলের প্রত্যাহার দাবি করেছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) শ্রীমা চাকমা জানান, এই ঘটনার তদন্তে কমিশনার অতিরিক্ত কমিশনার হুমায়ুন কবিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তিনি রিপোর্ট জমা দেবেন।
বিডি/এএন