গুলি চালানোর আগেই সতর্ক করা হয়েছিল আলমগীরকে!
Published : ১৭:৩৭, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
রাউজানে যুবদলকর্মী আলমগীর আলমকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে—ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে।
মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে অজ্ঞাত শাহিদের গুলিতে তিনি মারা যান।
ঘটনাস্থলে তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও একটি শিশু; তারা পেছনে একটি অটোরিকশায় যাচ্ছিলেন। পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিও সংক্রান্ত তদন্ত চলছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়—আলমগীর কারও সঙ্গে কথা বলছেন। সেই ব্যক্তিটি আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘আপনার গ্রুপের মধ্যে বখতিয়ার ফকিরের লোক ঢুকিয়ে দেবে।
এরপর আপনাকে খুন করবে, ফিল্ড খালি করার জন্য।’ আলমগীর জিজ্ঞেস করেন, ‘আমাকে কি এক সপ্তাহের মধ্যে মেরে ফেলবে?’ উত্তরে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘সুযোগ পেলে আধা ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে মেরে ফেলবে।’ ভিডিওটির ওই ব্যক্তির পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি; পুলিশের পক্ষ থেকে তা যাচাই চলছে।
নিহত আলমগীরের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীকে হত্যা করতে রায়হান বাহিনীকে ভাড়া করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ট্রাক দিয়ে পথ আটকে গুলি করা হয়েছে—এভাবেই তাদের জামাইকে হত্যা করা হয়েছে।
হত্যার সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজনের, বিশেষ করে বখতিয়ার ফকিরের নাম জড়িয়ে পড়েছে বলে ঘনঘন আভাস মিলছে বলে পরিবার ও এলাকাবাসী দাবি করেছেন।
ঘটনাটি নিয়ে রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রামের উদ্ধত পদে গণমান্য ব্যক্তিত্ব গোলাম আকবর খোন্দকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, আলমগীর দীর্ঘ ১২ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়ে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন—যে কারণে তাকে নানাভাবে হুমকি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মুখেও পড়তে হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, যারা প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত থাকতে পারে—তার শনাক্ত ও পর্যালোচনা চলছে। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, নিহত আলমগীর যাদের বিরুদ্ধে সন্দেহ ব্যক্ত করতেন, তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সেটা গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনও জানিয়েছেন, আলমগীরের সঙ্গে বিরোধ থাকা ব্যক্তিদের খাদ্য, ভিডিও ও অন্যান্য সূত্র পর্যালোচনা করে তদন্ত চালানো হচ্ছে; তবে হত্যার সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে এখনই কড়া মন্তব্য করছে না পুলিশ। তিনি যোগ করেছেন, এ পর্যন্ত মামলাও করা হয়নি; অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, নিহত আলমগীরকে স্থানীয়ভাবে বিএনপির সাবেক নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে মনে করা হয়।
বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় ১২ বছর কারাভোগের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তিনি রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হন।
তাঁর আকস্মিক এই বর্বর হত্যাকাণ্ড রাউজানসহ সমগ্র অঞ্চলে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে—স্থানীয়রা দাবি করছেন, দ্রুত বিচার ও ন্যায়বিচার না হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।
বিডি/এএন































