নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে পদ্মা সেতুর নতুন মাইলফলক

পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১, ২ ও ৩-এ মোট ৬.০৩ মেগাওয়াট-পিক ক্ষমতাসম্পন্ন রুফটপ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ ইস্ট কোস্ট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ওমেরা রিনিউএবল এনার্জি লিমিটেড এর মধ্যে এ চুক্তি সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে উভয় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি অনুযায়ী, পদ্মা সেতুর তিনটি সার্ভিস এরিয়ার ছাদে উন্নতমানের সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেম স্থাপন করা হবে। এর মোট উৎপাদনক্ষমতা হবে ৬.০৩ মেগাওয়াট-পিক। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতিবছর প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট-আওয়ার পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। এ বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে বছরে আনুমানিক ৬ হাজার টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমে আসবে, যা পরিবেশ সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে। পরিবেশগত দিক থেকে এই সাশ্রয় প্রায় আড়াই লাখ গাছ লাগানোর সমতুল্য অথবা ফুয়েল চালিত প্রায় এক হাজার ২০০ গাড়ি সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার সমান সুফল দেবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম বলেন,
“নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের এই উদ্যোগ শুধু পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের প্রতিশ্রুতিকেই প্রতিফলিত করছে না, বরং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পে সবুজ জ্বালানি সংযুক্তির এক অনন্য নজিরও স্থাপন করবে।”

ওমেরা সোলারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহিম বলেন,
“ইস্ট কোস্ট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই মাইলফলক প্রকল্পে অংশীদার হতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা বিশ্বমানের রুফটপ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশব্যাপী পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রসার ঘটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

উল্লেখ্য, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ দেশের বৃহৎ সেতু, টানেল ও অন্যান্য অবকাঠামোর বাস্তবায়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে থাকে। টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন ও জাতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে প্রতিষ্ঠানটির অবদান উল্লেখযোগ্য।

অন্যদিকে, ইস্ট কোস্ট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ওমেরা রিনিউএবল এনার্জি লিমিটেড বর্তমানে দেশের অন্যতম শীর্ষ নবায়নযোগ্য জ্বালানি কোম্পানি। সৌরবিদ্যুৎ সেক্টরে ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রোকিউরমেন্ট ও কনস্ট্রাকশন (ইপিসি) সেবা প্রদানে তারা বিশেষভাবে পরিচিত। উদ্ভাবনী, টেকসই ও দক্ষ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির সহজলভ্যতা বাড়াতে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছে।