কোটা আন্দোলন নিয়ে তারকারা যা বলছেন..

Published : ১৪:৫৯, ১৬ জুলাই ২০২৪
কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় যে যার অবস্থান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতামত শেয়ার করছেন। এ নিয়ে কথা বলছেন শোবিজ তারকা থেকে অনেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটররাও। ফেসবুকে তারকাদের অভিমত-
সিয়াম আহমেদ
দেশের ছোটপর্দা ও শোবিজের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার ক্যাম্পাস রক্তাক্ত কেন? শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরবে কেন?’
রওনক হাসান
অভিনেতা ও অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান বললেন, ‘কোটা সংস্কার হতেই পারে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য কোটা এমনিতেই দু-চার বছর পর অকার্যকর হয়ে যাবে! রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্মানসূচক একটি ন্যূনতম কোটা থাকা উচিত।’
রওনক আরও লিখেছেন, ‘সম্মানসূচক একটি ন্যূনতম কোটা থাকা উচিত কিন্তু হাজারো সাধারণ ছাত্রছাত্রীর এই আন্দোলনকে সুকৌশলে যেদিকে প্রবাহিত করা হলো, তা দেখে এটাই স্পষ্ট, এর মাস্টারমাইন্ড কারা।’
আশফাক নিপুন
দুজন ছাত্রীকে পেটাচ্ছেন একজন। তেমন একটি ছবি মন্তব্যের ঘরে পোস্ট করে পরিচালক আশফাক নিপুণ লিখেছেন, ‘ছাত্রদের পাশে দাঁড়ান।’
মিশুক মনি
‘দেয়ালের দেশ’ সিনেমার পরিচালক মিশুক মনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই সব দৃশ্য শহরে হু হু করে হাহাকার নামায়। মুক্তিযোদ্ধার বিরোধিতা করা আর মুক্তিযুদ্ধ কোটার বিরোধিতা করা এক নয়। এই মুল্লুকে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে রাজাকার হয়ে যায়। সরকারের চেয়ারধারী কোনো কর্তার দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে রাজাকার হয়ে যায়। দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামলে রাজাকার হয়ে যায়।’
জিয়াউর রহমান
দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘শিরোনামহীন’-এর লিডার জিয়াউর রহমান মনে করছেন, কোটাব্যবস্থা মানেই এক্সট্রা বেনিফিট দেয়ার রাস্তা।
ফেসবুক পোস্টে জিয়া লিখেছেন, ‘কোটা ব্যবস্থা’ মানেই এক্সট্রা বেনিফিট দেয়ার রাস্তা। মেধার বাইরেও আলাদা করে বিশেষ ক্ষেত্র অফার, যাতে বঞ্চিত গোষ্ঠী সুবিধা পায় কিংবা অসাধারণ/বিশেষ অবদানের জন্য, নিজের চূড়ান্ত স্যাক্রিফাইসের জন্য পরিবার বেনেফিটেড হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এই এক্সারসাইজটা করার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই।’
মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান স্মরণ করে জিয়া আরও লিখেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কারণেই আমরা স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে বেঁচে আছি, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু লক্ষ করুন, নিশ্চয়ই মুক্তিযোদ্ধা বা ওনাদের নিকটাত্মীয় তরুণ নয়। বঞ্চিত গোষ্ঠীর বিবেচনাতেও একই রকম ইক্যুয়েশন আছে। তার মানে, কোটাব্যবস্থা একটা প্রবল মিসইউজের রাস্তা তৈরি করা ছাড়া এখন আর কোনো ভূমিকা রাখছে না। মাঝখান থেকে মেধাবী, যোগ্য তরুণ হারাচ্ছে তার সুযোগ। ফ্রাস্ট্রেশন নিয়ে পাড়ি দিতে হচ্ছে তার দৈনন্দিন জীবন।’
পোস্টের শেষে জিয়া লিখেছেন, ‘কোটাব্যবস্থা থেকে তরুণ সমাজকে মুক্ত করা হোক। মেধা ও যোগ্যতা স্বীকৃতি পাক। এটা অনস্বীকার্য যে, আমাদের দেশে সঠিক জায়গায় যোগ্য মানুষের অভাব আছে। বঞ্চিতকে বেনিফিট দিতে গিয়ে যোগ্য কাউকে বঞ্চিত করা কোনো সুফল নিয়ে আসে না।’
তাসরিফ খান
তরুণ গায়ক তাসরিফ খান লিখেছেন, ‘ছাত্ররা সম্পূর্ণ যৌক্তিকভাবে তাদের মেধার মূল্যায়ন চায়। এই ন্যূনতম চাওয়াটুকু যদি না দেয়া হয়, তাহলে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের কিছু আর হতে পারে না।’
পরীমণি
সোমবার (১৪ জুলাই) পরীমণি এক ছাত্রীর উপর হামলার ছবি প্রকাশ করে লিখেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতায় আপনার জবান বন্ধ থাকলে আপনি মুনাফিক। অভিনেত্রীর এই পোস্টে ভক্ত-অনুরাগীরা নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন।
শায়ন তুরাস নামের একজন লিখেছেন, পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। নিগার সুলতানা লিখেছেন, ভালো বলেছেন। সুমি আক্তার লিখেছেন, সাহসী পরী। এইচ এম জুনায়েদ এমরান নামের আরেক ভক্ত লিখেছেন, সময়োপযোগী সাহসী পোস্ট।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ২টার পর থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সময় সংবাদের প্রতিবেদকরা জানিয়েছেন, শুরুতে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে অংশ নিলেও পরে অন্যান্য হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। বিজয় একাত্তর হলের সংঘর্ষের রেশ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে। পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের হটিয়ে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নেন।
বিকেল ৫টার পর ঢাবির দোয়েল চত্বর এলাকায় ফের আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের দিকে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহ আবাসিক হলের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল ছোড়া এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
আবাসিক হলের ভেতর থেকেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া শুরু হয়। এরমধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। তবে এ সময় পুলিশের কোনো উপস্থিতি ঘটনাস্থলে ছিল না। যদিও প্রথম দফা সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর ক্যাম্পাসে পুলিশ সদস্যদের ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। সন্ধ্যা ৭টার পর আবারও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশ ফোর্স।
বিডি/ও