ইরান তাদের পরমাণু শক্তিনির্ভর জ্বালানি উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে এবার বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশটি নতুন করে ৮টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, আর এই প্রকল্পে সহযোগিতা করছে পরমাণু শক্তিধর দেশ রাশিয়া।
রবিবার (২ নভেম্বর) ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা (AEOI)-এর প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি এক ঘোষণায় বলেন, টেকসই ও পরিষ্কার জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যেই রাশিয়ার সহায়তায় ইরান এই নতুন পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নির্মাণ করতে যাচ্ছে। তিনি জানান, এর মধ্যে বুশেহর অঞ্চলে চারটি কেন্দ্র এবং ইরানের অন্যান্য অংশে আরও চারটি কেন্দ্র নির্মিত হবে। তবে এসব স্থাপনার সুনির্দিষ্ট অবস্থান পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
ইসলামি বলেন, এই নতুন প্রকল্প ইরানের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে এটি দেশের জন্য একটি স্থিতিশীল, নির্ভরযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎস নিশ্চিত করবে। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, উত্তর উপকূলের গোলেস্তান প্রদেশেও একটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এর জন্য উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
এইওআই প্রধানের ভাষায়, রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মিত নতুন কেন্দ্রগুলো ইরানকে প্রায় ২০ হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা দেবে—যা দেশটির জ্বালানি খাতে আত্মনির্ভরশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের পথে একটি বড় অগ্রগতি।
এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ঘোষণা দিয়েছেন যে, চলতি বছরে মার্কিন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরও শক্তিশালীভাবে পুনর্নির্মাণ করা হবে। তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, “আমাদের স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে ইরানকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা সেগুলো আরও উন্নত ও দৃঢ়ভাবে পুনর্গঠন করব।”
উল্লেখ্য, গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল। মার্কিন দাবি অনুযায়ী, এগুলো ছিল পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অংশ। তবে তেহরান দৃঢ়ভাবে জানিয়ে এসেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
































