পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা ও আশপাশের এলাকায় মঙ্গলবার সকালে আকাশে দেখা গেছে এক বিরল ও অভূতপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য।
সূর্যোদয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে আকাশজুড়ে ভেসে ওঠে উজ্জ্বল রঙের এক লেন্স আকৃতির মেঘ, যা দেখে বিস্মিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কোয়েটার কোহ-ই-মুর্দার পর্বতমালার ওপরে এই মেঘটি দেখা যায়। প্রায় ২০ মিনিট ধরে সেটি লাল, কমলা, হলুদ ও সবুজ রঙে আলোকিত ছিল। এই মেঘের আকৃতি ছিল অনেকটা বৃত্তাকার, যা দেখতে অনেকটা ‘অগ্নি রংধনু’ বা ‘মেঘের ইরিডেসেন্স’-এর মতো—একটি অত্যন্ত বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা। কোয়েটার পাশাপাশি নুশকি ও ডালবন্দিনের আকাশ থেকেও দৃশ্যটি দেখা গেছে।
তবে এই অসাধারণ দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। কেউ এটিকে ভিনগ্রহের মহাকাশযান বলে দাবি করেন, আবার কেউ বলেন এটি নাকি পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ফল। অনেকেই এমনও দাবি করতে থাকেন, এটি কোনো হাইপারসনিক বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ধোঁয়ার চিহ্ন, যা ১০ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
পরে পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তর (পিএমডি) দ্রুতই গুজবের অবসান ঘটায়। সংস্থাটি জানায়, ঘটনাটি কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ফল নয়, বরং এটি একটি ‘লেন্টিকুলার মেঘ’—যা বাতাস ও আর্দ্রতার বিশেষ সংমিশ্রণে পাহাড়ি এলাকায় গঠিত হয়।
পিএমডির মুখপাত্র আনজুম নাজির ব্যাখ্যা করে বলেন, “কোহ-ই-মুর্দারের পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ে আর্দ্র বাতাসের কারণে এই মেঘ তৈরি হয়েছে। স্থির অবস্থায় থাকা এই মেঘ সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে রংধনুর মতো দৃশ্য সৃষ্টি করে।”
সংস্থাটি আরও জানায়, লেন্টিকুলার মেঘ সাধারণত প্রবল বাতাস ও আর্দ্রতার কারণে পাহাড়ি অঞ্চলে গঠিত হয়, যা খুবই বিরল দৃশ্য। তারা নিশ্চিত করে বলেছে, ওই সময় পাকিস্তানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়নি।
অর্থাৎ, যা নিয়ে ছিল রহস্য আর গুজব, সেটি আসলে ছিল প্রকৃতির এক অপূর্ব সৃষ্টি—একটি লেন্টিকুলার মেঘ, যা কোয়েটার আকাশে রঙের বিস্ময় ছড়িয়ে দিয়েছে।


































