দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফয়সালাবাদের ঐতিহাসিক ইকবাল স্টেডিয়াম আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উত্তাপ ছড়াতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজের মাধ্যমে এই ভেন্যু নতুন প্রাণ ফিরে পেতে চলেছে।
তবে ম্যাচের উত্তেজনার পাশাপাশি স্টেডিয়ামের জীর্ণ অবকাঠামো, দীর্ঘদিনের অবহেলা এবং ব্যবস্থাপনার অনিয়ম নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে শহরজুড়ে। স্থানীয় দর্শকদের অভিযোগ, প্রায় দুই দশক ধরে স্টেডিয়ামে কোনো বড় সংস্কার বা উন্নয়ন কাজ করা হয়নি। গ্যালারির প্রায় ৯০ শতাংশে সঠিক বসার আসন নেই, ফলে দর্শকরা খেলা দেখতে বাধ্য হচ্ছেন কংক্রিটের সিঁড়িতে বসে। এছাড়া স্টেডিয়ামে ছাউনি বা ছাদ নেই, যা রোদ বা বৃষ্টির সময় দর্শকদের সুরক্ষা দিতে পারত।
অবাক করার বিষয় হলো, স্টেডিয়ামটি পাঞ্জাব সরকার, পাঞ্জাব স্পোর্টস বোর্ড বা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) অধীনে নয়। এটি পরিচালিত হচ্ছে স্বাধীন সংস্থা ইকবাল স্টেডিয়াম ম্যানেজমেন্ট কমিটি (আইএসএমসি) দ্বারা, যা সরকারিভাবে মনোনীত ৯ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত। কমিটির মধ্যে রয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী।
প্রতিবছর আইএসএমসি ৬ কোটি ৩০ লাখ রুপি আয় করে, যেখানে ব্যয় মাত্র ৩ কোটি ৯ লাখ রুপি। স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের শতাধিক দোকান, অফিস, রেস্টুরেন্ট ও বিনোদনকেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ আয় সরাসরি আইএসএমসির অ্যাকাউন্টে জমা হয়, প্রাদেশিক কোষাগারে নয়।
এমনকি ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ক্রিকেট কাপের সময়ও আইএসএমসি কোনো খরচ বহন করেনি। পুরো নিরাপত্তা ও লজিস্টিক ব্যয় বহন করেছে পাঞ্জাব সরকার, যা ৩ কোটি ৫০ লাখ রুপি, আর টিকেট বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপি, যা পিসিবি নিয়েছে।
এই অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা দাবি তুলেছেন, ইকবাল স্টেডিয়ামকে অবিলম্বে পিসিবির অধীনে নিয়ে এসে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের মতো আধুনিক মানে উন্নীত করতে হবে।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার দল রোববার ফয়সালাবাদে পৌঁছালে বিমানবন্দর থেকে শহরমুখী সব সড়ক অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয় এবং কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে শহরে কার্যত ক্রিকেটের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে, কিন্তু একই সঙ্গে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতির বিষয়টিও নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।
































