ইমরানের বেঁচে থাকার প্রমাণ নেই: ছোট ছেলের অভিযোগ
Published : ১২:২১, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই তার তিন বোন অভিযোগ করেছেন, বহুবার চেষ্টা করেও তারা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাচ্ছেন না। বরং কারাগারের সামনে গিয়ে সাক্ষাতের দাবি জানাতে গেলে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালায় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
আদিয়ালা কারাগারের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর এই আচরণ ঘটনাটিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে। ইমরান সমর্থক ও পিটিআই নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। হাজার হাজার মানুষ কারাগার এলাকার আশপাশে জড়ো হয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতি দিয়ে জানান, ইমরান খান এখনো আদিয়ালা কারাগারেই অবস্থান করছেন এবং তাকে কোথাও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। তারা আরও দাবি করে, তিনি সুস্থ আছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন। তার অসুস্থতা বা মৃত্যুর গুজবকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ জানান, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও একই বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, কারাগার নিয়ম অনুযায়ী যে সুবিধা একজন বন্দি পেতে পারেন, ইমরান খান তার থেকেও বেশি সুবিধা পাচ্ছেন।
তবে এসব নিশ্চয়তা সত্ত্বেও ইমরান খানের প্রকৃত অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন আরও ঘনীভূত হয়েছে। নতুন করে বিতর্ক সামনে এনেছেন তার ছোট ছেলে কাসিম খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত বক্তব্যে কাসিম দাবি করেন, পরিবারের কাছে এখনো ইমরান খানের জীবিত থাকার কোনো প্রমাণ নেই। পরিবারকে তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না—যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
কাসিম জানান, ইমরান খান ৮৪৫ দিন ধরে কারাবন্দি এবং গত ছয় সপ্তাহ ধরে তাকে ডেথ সেলে একক বন্দিত্বে রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পরিবারের সাক্ষাতের অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। তিনি লেখেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তাদের সঙ্গে কোনো ফোন কল বা যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। ফলে ইমরানের জীবিত থাকার প্রমাণ পাচ্ছে না পরিবার।
কাসিম সতর্ক করে বলেন, ইমরান খানের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় পাকিস্তান সরকার এবং তাদের পেছনের প্রভাবশালী শক্তিকেই বহন করতে হবে—আইনগত ও নৈতিকভাবে।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান। কাসিম লিখেছেন, ইমরান খানের জীবিত থাকার প্রমাণ নিশ্চিত করতে হবে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তার ওপর যে অমানবিক বিচ্ছিন্নতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটির অবসান ঘটাতে হবে। একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আটক পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার মুক্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী পদ হারান ইমরান খান। এরপর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁস এবং সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে হামলার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। নানা নাটকীয় ঘটনার পর ২০২৩ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়; একবার মুক্তি পেলেও আবার গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে তিনি কারাগারেই রয়েছেন।
বিডি/এএন

































