নিজেকে চাঙা বলার ১৫ মিনিট পরেই ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প

নিজেকে চাঙা বলার ১৫ মিনিট পরেই ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৬:৩২, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল গতকাল মঙ্গলবার। বৈঠকের শুরু থেকেই সদস্যরা ট্রাম্পের প্রশংসায় ব্যস্ত ছিলেন।

শেষ দিকে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বৈঠক শুরু হওয়ার পরপরই ট্রাম্প তাঁর স্বভাবমতো সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ‘স্লিপি জো’ বলে সমালোচনা করেন এবং দাবি করেন—২৫ বছর আগের তুলনায় তিনি এখন আরও বেশি সতেজ।

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে তাঁর বয়স, কর্মক্ষমতা ও জনসমক্ষে উপস্থিতি নিয়ে সন্দেহ তোলায় ট্রাম্প বিরক্তি প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে কিছুটা ধীর হয়ে গেছেন। ট্রাম্প পাল্টা বলেন—তিনি চটপটে, বরং সমালোচকরাই দুর্বল।

কিন্তু প্রায় আড়াই ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠকে বারবার দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট মনোযোগ ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা একে একে তাঁর প্রশংসা করলেও ট্রাম্পকে কখনো চোখ বন্ধ করে স্থির হয়ে থাকতে দেখা যায়, কখনো ধীরে মাথা নাড়তে বা হঠাৎ চমকে উঠে সোজা হয়ে বসতে দেখা যায়। সিএনএন বলছে, পুরো বৈঠকে তিনি একাধিকবার যেন ঘুমের সঙ্গে লড়াই করেছেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক থেকে শুরু করে শ্রমমন্ত্রী লরি চাভেজ-ডিরিমা, শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহন—প্রায় সবার বক্তব্য চলাকালেই ট্রাম্পের চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। বিশেষ করে রুবিওর বক্তব্যের সময় তাঁকে ঢলে পড়তে দেখা যায়। পরে হঠাৎ সোজা হয়ে আবার মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করেন।

তবে হোয়াইট হাউস সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দিয়েছে। প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট মনোযোগ দিয়ে পুরো তিন ঘণ্টার বৈঠক পরিচালনা করেছেন এবং সবকিছু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁর ভাষায়—ট্রাম্পের নেতৃত্বে এগুলো ছিল ‘ঐতিহাসিক’ মন্ত্রিসভা বৈঠক।

তবে এটি প্রথমবার নয়। এর আগেও গত ৬ নভেম্বর ওভাল অফিসে একটি অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে দীর্ঘ সময় চোখ খোলা রাখতে সংগ্রাম করতে দেখা যায়। সেই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

এমন সময়ে ট্রাম্পের আকস্মিক এমআরআই পরীক্ষার খবর মানুষকে আরও কৌতূহলী করে তুলেছে। হোয়াইট হাউস বলছে—এটি ছিল নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষার অংশ, এবং তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রসহ সবকিছুই ‘চমৎকার’ অবস্থায় আছে। তবু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ স্বাস্থ্যপরীক্ষায় এমআরআই খুব কমই করা হয়—এ কারণে পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।

বয়স এবং শারীরিক সক্ষমতার বিষয়টি তাই নতুন করে আলোচনায় এসেছে—ট্রাম্প কি সত্যিই ততটাই প্রাণশক্তিতে ভরপুর, যতটা তিনি দাবি করেন? নাকি দীর্ঘ বৈঠকগুলোই তাঁর সীমাবদ্ধতাকে সামনে এনে দিচ্ছে—এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement