ইউক্রেনে ভোট হলে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রাশিয়ার

ইউক্রেনে ভোট হলে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রাশিয়ার ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৩:২৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি যদি জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন, তাহলে সেই নির্বাচনকালীন সময়ে অন্তত সাময়িকভাবে ইউক্রেনের ভেতরে হামলা বন্ধ রাখবে রুশ বাহিনী—এমন ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা রাশিয়ান টেলিভিশন (আরটি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, ইউক্রেনে নির্বাচন ঘোষিত হলে ভোটের দিন দেশটির অভ্যন্তরে সামরিক অভিযান থেকে বিরত থাকতে প্রস্তুত রয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। তিনি আরও জানান, সীমান্ত অতিক্রম করে যেসব ইউক্রেনীয় নাগরিক বর্তমানে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছেন, তারাও যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে ইউক্রেনে যেতে পারেন—সে ক্ষেত্রেও রাশিয়া কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না।

তবে একই সঙ্গে সতর্কবার্তাও দেন পুতিন। তার ভাষায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যদি ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অস্ত্র ও সেনা মজুত শুরু করে, তাহলে এর পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।

উল্লেখ্য, ইউক্রেনে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের মে মাসে। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২০ মে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের মেয়াদ পাঁচ বছর, সে হিসেবে ২০২৪ সালের মে মাসেই জেলেনস্কির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু যুদ্ধ চলমান থাকার অজুহাতে ইউক্রেনে একাধিকবার নির্বাচন আয়োজনের দাবি উঠলেও প্রতিবারই তা নাকচ করেন জেলেনস্কি। সামরিক আইনের মেয়াদ বাড়িয়ে তিনি এখনো ক্ষমতায় রয়েছেন। ২০২৪ সালের মে মাস পার হওয়ার পর থেকেই মস্কো দাবি করে আসছে, জেলেনস্কির সাংবিধানিক মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা করতে আগ্রহী নয় রাশিয়া।

পুতিন আগেই জানিয়েছিলেন, জেলেনস্কি যদি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন, তাহলে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসতে মস্কোর কোনো আপত্তি থাকবে না। এমনকি জেলেনস্কি নিজে যদি পুনরায় নির্বাচিত হন, সেক্ষেত্রেও আলোচনা করতে প্রস্তুত রাশিয়া।

তবে ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এবং জেলেনস্কি নিজে রাশিয়ার এই প্রস্তাবের প্রতি গুরুত্ব দেননি। পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আসে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সক্রিয় উদ্যোগ নিয়ে আসছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের কূটনৈতিক চাপের ফলেই সম্প্রতি জেলেনস্কি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement