যেভাবে জুবায়েদ হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বর্ষা ও মাহীর

যেভাবে জুবায়েদ হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বর্ষা ও মাহীর ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:৫৭, ২১ অক্টোবর ২০২৫

শুধু মাহীর রহমানই নয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডের পেছনে তার ছাত্রী বর্ষারও সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে—এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

প্রথমে মনে করা হচ্ছিল হত্যাকাণ্ডটি মাহীর একাই ঘটিয়েছে, কিন্তু তদন্তের অগ্রগতিতে জানা যায়, এটি ছিল বর্ষা ও মাহীরের যৌথ পরিকল্পনা অনুযায়ী সংঘটিত একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যা।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “মাহীর ও বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, দুজন মিলে জুবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।”

ওসি আরও জানান, বর্ষা ও মাহীরের সম্পর্ক ছিল প্রায় ৯ বছর ধরে। কিন্তু সম্প্রতি বর্ষা জুবায়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং মাহীরকে সম্পর্ক শেষ করতে বলেন। তিনি মাহীরকে জানান যে, তিনি জুবায়েদকে পছন্দ করেন। কিছুদিন পর আবার মত পরিবর্তন করে বর্ষা মাহীরকে বলেন, জুবায়েদকে আর ভালো লাগে না। এরপর থেকেই দুজন মিলে জুবায়েদকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।

প্রথমদিকে বর্ষা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও, মাহীরকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে সব সত্য উন্মোচিত হয়। ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, “গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই তারা পরিকল্পনা শুরু করে কীভাবে জুবায়েদকে সরিয়ে দেওয়া যায়।” বর্তমানে বর্ষাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে, এবং মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে।

ঘটনার দিন, অর্থাৎ রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার পানির পাম্প গলিতে ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে বর্ষার বাসার নিচেই প্রাণ হারান জুবায়েদ। ঘটনার দিন বিকেল ৪টার দিকে বর্ষাকে পড়াতে গেলে, বাসার নিচে মাহীর নতুন কেনা সুইচগিয়ার দিয়ে জুবায়েদের মাথায় আঘাত করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিল বন্ধু ফারদিন আহম্মেদ আয়লান। আর জুবায়েদের অবস্থান ও চলাফেরা সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল ছাত্রী বর্ষা নিজেই।

তদন্তে জানা গেছে, জুবায়েদ প্রায় এক বছর ধরে বর্ষাকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন, আর নিহত জুবায়েদ কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মেধাবী শিক্ষার্থীকে সোমবার রাতে নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে সহপাঠী, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement