বুয়েটে ধর্ষণ অভিযুক্ত শিক্ষার্থী; রাতের বিক্ষোভ

বুয়েটে ধর্ষণ অভিযুক্ত শিক্ষার্থী; রাতের বিক্ষোভ ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ০২:৩৮, ২২ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডডিটে সহপাঠীকে ধর্ষণ,

বোরকা, হিজাব এবং নারীদের বিষয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবি জানিয়েছেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

ঘটনাটি বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে ঘটে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন ডিএসডব্লিউ ভবনের (ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর) সামনে সমবেত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল এবং ধর্ষণ মামলায় তার গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম শ্রীশান্ত রায়। তিনি বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং আহসানউল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, রেডডিটে প্রকাশিত স্ক্রিনশটে দেখা যায়, শ্রীশান্ত নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এক নারী সহপাঠীকে ধর্ষণ করেছেন এবং বোরকা, হিজাব ও নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তারা বলেন, “এমন একজন আমাদের সহপাঠী হতে পারে না। আমরা চাই তার বহিষ্কার হোক এবং ধর্ষণের বিচার করা হোক।”

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, রেডডিট আইডির সঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মিল পাওয়া গেছে। তাদের মতে,

১) রেডডিট ব্যবহারকারী নিজেকে ‘বুয়েট ইইই-২১’-এর শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
২) একাধিক মন্তব্যে তিনি বাসইউস ব্র্যান্ডের এয়ারবাডস ব্যবহারের উল্লেখ করেছেন, যা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ব্যবহারের সাথে মিলে।
৩) রেডডিট আইডি থেকে জানা যায়, সে জুন মাসে মুস্তাং, নেপাল সফর করেছেন; একই সময়ে শ্রীশান্ত তার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুস্তাং থেকে ছবি পোস্ট করেছেন।
৪) রেডডিটে লেখা অশালীন মন্তব্যের ভাষা, টোন ও লেখনশৈলী বহু সহপাঠী শনাক্ত করেছেন এবং এটি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর লেখনভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

৫) যখন বুয়েট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি-বর্জনের পক্ষে সম্মিলিত স্বাক্ষর দিয়েছেন, তখন তিনি একমাত্র সেই কাগজে স্বাক্ষর করেননি, যা তার নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

উক্ত প্রমাণ ও মিলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা দৃঢ়ভাবে সন্দেহ করছেন যে, শ্রীশান্ত রায়ই ওই রেডডিট আইডির ব্যবহারকারী এবং সে সচেতনভাবে নারীদের প্রতি অশালীন ও হয়রানিমূলক আচরণ করেছেন। তারা আরও দাবি করেন, অতীতে যদি কেউ তার কাছ থেকে এ ধরনের কোনো আচরণের শিকার হয়ে থাকে, তবে সে গোপনীয়তা বজায় রেখে হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার ব্যবস্থা করা হোক।

শিক্ষার্থীদের দাবির পর ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে জানান, শ্রীশান্ত রায় (আইডি: ২১০৬১৬৯)-এর ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে। স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে আগামীদিনে বুয়েট উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা হবে।

এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈতিকতা, নিরাপত্তা ও শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার বিষয়কে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement