এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) কোটি কোটি ডলার ক্ষতির অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক সালিসি কেন্দ্রে (ICSID) আবেদন করেছেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) ওয়াশিংটনে বিশ্বের ব্যাঙ্কের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি কেন্দ্রে এস আলম এবং তার পরিবারের আইনজীবীরা এই আবেদন দাখিল করেন। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এই তথ্য জানিয়েছে।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত ছিল, তাদের সম্পদ “যথেচ্ছভাবে জব্দ, বাজেয়াপ্ত এবং মূল্যহ্রাসের লক্ষ্যবস্তুতে” পরিণত করেছে। এই মামলা ইউনূস সরকারের শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের বাইরে পাচার হওয়া কোটি কোটি ডলার অর্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরকার কর্তৃক প্রকাশিত অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র অনুযায়ী, দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর দাবি করেছেন, এস আলম পরিবার প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার দেশীয় ব্যাংকিং সিস্টেম থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তবে এস আলম পরিবার এই অভিযোগের কোনো সত্যতা স্বীকার করেনি।
মার্কিন আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল অ্যান্ড সুলিভান-এর মাধ্যমে করা এই আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, সরকার তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে, মিথ্যা তদন্ত চালাচ্ছে এবং পরিবারটিকে লক্ষ্য করে উস্কানিমূলক মিডিয়া প্রচারণা চালাচ্ছে।
এই সালিসি দাবি বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের ২০০৪ সালের দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির অধীনে দাখিল করা হয়েছে। আইনি নথি অনুযায়ী, এস আলম পরিবার ২০১১ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে বসবাস করছে এবং ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালে তারা বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, “সালিসি আমাদের কাছে পৌঁছালে আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জবাব দেব।” তবে ড. ইউনূসের কার্যালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
