ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “রয়টার্সে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কথা বলবে। তবে আমরা আগে পুরো সাক্ষাৎকারটি পড়ে দেখব, তারপর আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করব।”
শফিকুল আলম বলেন, “একটা বিষয় আমরা বহুবার বলেছি— জাতিসংঘের রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে উঠে এসেছে, একবিংশ শতাব্দীতে শেখ হাসিনার মতো ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আর কেউ ঘটাননি। আলজাজিরার এক ঘণ্টাব্যাপী প্রামাণ্যচিত্রেও দেখা গেছে, তিনি হত্যার নির্দেশ দিচ্ছেন। সুতরাং, যারা তাকে সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন, তারা যেন এই প্রেক্ষাপট ভুলে না যান।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা লক্ষ্য করছি, শেখ হাসিনার দাবিগুলো প্রেক্ষাপট ছাড়া উপস্থাপন করা হচ্ছে। গতকাল একটি স্থানীয় গণমাধ্যমে আন্তর্জাতিক আদালতে তার দলের একটি পদক্ষেপের কথা দেখলাম, সেখানে তার বিরুদ্ধে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো উল্লেখ ছিল না— যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
প্রেসসচিব জানান, “আমরা এখনও সাক্ষাৎকারটি দেখি নাই, কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন কোথায়? তারা তো কার্যত নেই। দু-একটা হঠাৎ মিছিল করে, কেউ হয়তো কিছু অর্থ পায়, এর বেশি কিছু নয়।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ দাবি করছে, ৪০০ জন মারা গেছে। অথচ যারা অভিযোগ করছে, তারাই দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকায় যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ব্যয়বহুল আইন সংস্থা ভাড়া করছে— যা অত্যন্ত অনৈতিক। দেশের চুরি করা টাকায় এই কাজ করা হয়েছে, এবং সেটিকে আবার কেউ কেউ প্রচারেও সাহায্য করছে।”
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “দেশের ভেতরে ও বাইরে কিছু চক্র নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে— আমরা তা স্পষ্টভাবে দেখছি। পতিত স্বৈরশাসক এবং তার সহযোগীরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না। তাদের শাসনামলে ১৫ বছরে একটিও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি— না জাতীয়, না স্থানীয় পর্যায়ে। তারা আবারও অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়।”
শেষে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার লক্ষ্য স্পষ্ট— দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। যত চ্যালেঞ্জই আসুক, সেটিই হবে আমাদের অঙ্গীকার।”

































