হামলাকারীরা যাতে কোনোভাবেই দেশ ছাড়তে না পারে, কড়া হুঁশিয়ারি: প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ।

হামলাকারীরা যাতে কোনোভাবেই দেশ ছাড়তে না পারে, কড়া হুঁশিয়ারি: প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

Published : ০০:৪৯, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় হামলাকারীরা যাতে কোনোভাবেই দেশ ছাড়তে না পারে, সীমান্তে তাৎক্ষণিকভাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি এ হামলাকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার ওপর সুপরিকল্পিত আঘাত বলে উল্লেখ করেন এবং দ্রুততম সময়ে হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা-য় জরুরি বৈঠক

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এসব নির্দেশনা দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন—
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, তথ্য উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
 “এ হামলা বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করার দুঃসাহস”

হাদির ওপর হামলা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন—
“এ হামলা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালের অন্যতম উদ্বেগজনক ঘটনা। এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার ওপর সুপরিকল্পিত আঘাত। পরাজিত শক্তি দেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করার দুঃসাহস দেখিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন—
“জাতির ওপর এমন অপশক্তির আঘাত বরদাশত করা হবে না। নির্বাচন ও গণভোট বানচালের যে চেষ্টা চলছে, তা কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া হবে না।” লাইফ সাপোর্টে ওসমান হাদি

সভায় প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান জানান, হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। পরিবারের ইচ্ছায় তাকে ইতোমধ্যে ঢামেক থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন। সীমান্তে কড়া নজরদারি ও তাৎক্ষণিক অভিযান

সভায় পুলিশ জানায়, হামলার স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ ও আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দেন—

হামলাকারীরা যাতে কোনোভাবেই দেশ ছাড়তে না পারে, সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করতে হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান বাড়ানো হবে।হামলাকারীরা যেসব এলাকায় লুকিয়ে থাকতে পারে সেখানে তাৎক্ষণিক রেইড চালানো হবে।

 সম্ভাব্য টার্গেটদের নিরাপত্তার ওপর জোর জুলাই অভ্যুত্থানে যারা সামনের সারিতে ছিলেন, তাদের ওপর হামলার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন—
“সকল সম্ভাব্য টার্গেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

 বিশেষ হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত নির্বাচনকালে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই একটি বিশেষ হটলাইন নম্বর চালু করার সিদ্ধান্তও সভায় গৃহীত হয়।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

হাদির ওপর নৃশংস হামলার পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। সরকার আশ্বাস দিয়েছে—
দায়ীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

আরএইচ/ ঢাকা

শেয়ার করুনঃ
Advertisement