জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে-ডা. শফিকুর রহমান।

Published : ২২:০৪, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
আগামী নির্বাচনে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে আমরা শাসক নয়; বরং সেবক হিসাবে দেশে সুশাসন ফিরিয়ে এনে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি গতকাল ১৩ অক্টোবর রাত ৮ টায় কাফরুল উত্তর থানা জামায়াত আয়োজিত মিরপুর-কাফরুল এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
থানা আমীর রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাফেজ আশিকুর রহমানের সঞ্চালনায় পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম।
উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও মিরপুর পূর্ব থানা আমীর শাহ আলম তুহীন, কাফরুল উত্তর থানার নায়েবে আমীর মো. আলাউদ্দিন, থানা কর্মপরিষদ সদস্য শাহিন আলম,নিজামুদ্দিন ও কেরামত বিন আহমেদ মিয়াজী প্রমূখ।
পথ সভায় যোগদানের আগে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান পূর্ব বাইশটেকি বাইতুল হারাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এশার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে তিনি মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ও কুশলাদি বিনিময় করেন।
পরবর্তীতে তিনি গণসংযোগে অংশ নেন। গণসংযোগ শেষে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে এক বিশাল নির্বাচনী মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক জনসাধারণের অংশগ্রহণ ঘটে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার গত প্রায় ১৬ বছরে দেশে অশাসন-দুঃশাসন চালিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সকল রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে রীতিমত অকার্যকর করে ফেলে হয়েছে।
ফলে দেশ অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সকল নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্তভাবে গণমানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে।
হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও আয়না ঘরে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে দেশে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিলো। মূলত, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা বলে যারাই ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই জনগণের কল্যাণ না করে নিজেদের ভাগ্যই পরিবর্তন করে নিয়েছেন। ফলে দেশে দুর্নীতি ও লুটপাট প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।
তিনি প্রত্যয়ের সাথেই বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে। আমরা নিজেরা দুর্নীতি করবো না; আর অন্যদেরকেও দুর্নীতি করতে দেবো না। সর্বোপরি ক্ষমতার জন্য আমাদের সম্পদ বাড়বে না’। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতি ও ক্ষমতা কোন উপভোগের বিষয় নয় বরং সেবামূলক কাজ।
গণমানুষের সেবাই হচ্ছে গণমুখী রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। মূলত, প্রচলিত রাজনীতির কক্ষচ্যুতির কারণেই রাজনীতি হারিয়েছে গণমুখী চরিত্র। আর কুরআন ও সুন্নাহ আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণে সমাজে এতো অন্যায়, অবিচার ও অশান্তি। সঙ্গত কারণেই জুলুমবাজী, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজী, খুন, ধর্ষণ সহ নানাবিধ অপরাধ প্রবণতা আমাদের জনজীবনকে অশান্ত ও অস্থির করে তুলেছে।
আল্লাহ আমাদের যদি ক্ষমতা দেন, তাহলে আমরা প্রথমেই সকল অপরাধীকে আইন ও বিচারের আওতায় এনে দেশকে অপরাধ মুক্ত করবো। আগামীর নতুন বাংলাদেশে চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজদের কোন স্থান হবে না বরং তাদের হাতকে অবশ করে দেওয়া হবে‘। তিনি দেশকে অপরাধমুক্ত করতে জামায়াতের হাতকে শক্তিশালী করতে সকল স্তরের জনতার প্রতি আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান শুধু দেশেই নন বরং আন্তর্জাতিকভাবেও অধিকতর গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি’। তিনি দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৫ আসনে তাঁর বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে করার আহবান জানান।
বিডি/এএন