এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে প্রশ্ন তুললেন পাটওয়ারী

নির্বাচন কমিশন যদি নিজের মতো করে পরিচালিত হয়, তাহলে কমিশনারদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে — এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল। দেশজুড়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ জানায় তারা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন এখন জংলি কায়দায় চলছে। আমরা তাদের কাছে লিখিতভাবে আইনগত ব্যাখ্যা চেয়েছি। নির্বাচন কমিশন (ইসি) যেন গনিমতের মাল হিসেবে ভাগাভাগি না হয়, সেটাই আমরা চাই। কমিশনের ভেতরে যারা অনিয়মে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান জনগণের, কোনো পরিবার বা গোষ্ঠীর নয়।”

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্যে আরও উঠে আসে কমিশনের প্রতি অবিশ্বাসের সুর। তিনি বলেন, “এই কমিশনের অধীনে ভোটে যাওয়া সম্ভব নয়, যদি তারা মৌলিক সমস্যা সমাধান করতে না পারে। আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ফেরার জন্য কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। যদি তা না মানা হয়, তবে কমিশনারদের পদত্যাগ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।”

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, “কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন নিজের মতো করে ইসি পরিচালনা করতে না পারে—এ ব্যাপারে আমরা তাদের সতর্ক করে দিয়েছি। তারা যদি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান না করেন, তাহলে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে কমিশনের সবাইকে পদত্যাগে বাধ্য করব।”

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সংসদে জুলাই সনদ নামে যে নাটক হয়েছে, তারা এখন ঘুমাচ্ছে। গণভোটের কোনো নির্দেশনা ইসি পায়নি। চুপিচুপি করা সেই জুলাই সনদ এনসিপি মানবে না। কমিশনের মধ্যে যারা আছে, তারা অদৃশ্য শক্তির হয়ে কাজ করছে। নির্বাচন কমিশনকে সেই শক্তির প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “দেশে ব্যবসায়ীদের গুদাম জ্বলছে, নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়—এই অবস্থায় কীভাবে নির্বাচন হবে? ভোটার তালিকা যদি সঠিক না হয়, তাহলে পুরো প্রক্রিয়াই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কমিশনের কর্মকর্তারা প্রবাসী ভোটারদের নামে আমোদ ফুর্তিতে ব্যস্ত, অথচ জনগণের আস্থা হারিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ইসি যদি আন্তরিক হয়, তাহলে এক মাসের মধ্যেও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।”

চূড়ান্তভাবে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনাররা যদি মনমতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ইসি চালান, তাহলে আমরা তাদের পদত্যাগে বাধ্য করব। দেশ আর এমন প্রহসন সহ্য করবে না।”