ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেম থাকলে এমন দুর্ঘটনা হতো না: ফায়ার সার্ভিস

ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেম থাকলে এমন দুর্ঘটনা হতো না: ফায়ার সার্ভিস ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৮:২৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে যদি সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ শনাক্তকরণ (ডিটেকশন) ও প্রতিরোধ (প্রটেকশন) ব্যবস্থা চালু থাকত, তাহলে এত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটত না বলে মন্তব্য করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের সামনে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কার্যক্রম শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখেছি—কার্গো ভিলেজে কোনো ধরণের অগ্নি শনাক্তকরণ বা সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। যদি এসব ব্যবস্থা সক্রিয় থাকত, তাহলে এই দুর্ঘটনা এতটা বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়ত না। ভবিষ্যতে এমন সিস্টেম স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি।”

ফায়ার সার্ভিস পরিচালক জানান, শনিবার দুপুর ২টা ১৪ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরপরই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সর্বমোট ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

তিনি আরও বলেন, “আগুনের সূত্রপাত হয় কাস্টমস হাউসের অংশ থেকে। ভবনের ভেতরটি ছিল একাধিক ছোট ছোট কম্পার্টমেন্টে বিভক্ত, যেখানে দাহ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ (হ্যাজার্ডাস) পদার্থের উপস্থিতি ছিল বেশি। এজন্য আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে।”

তাজুল ইসলাম বলেন, “ভবনটি স্টিল স্ট্রাকচারে নির্মিত হওয়ায় প্রচণ্ড তাপে ধাতব অংশগুলো তাপ শোষণ করে রেখেছিল। এখনো সেই তাপ নির্গত হচ্ছে, তাই বাইরে থেকে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। তবে নতুন করে আগুন জ্বলে ওঠার কোনো আশঙ্কা নেই। ধোঁয়া না কাটা পর্যন্ত চারটি ইউনিট সতর্ক অবস্থানে থাকবে।”

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে, কোথাও কোনো বাধা বা বিলম্ব হয়নি। “বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট এবং আমাদের দল সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি,” তিনি যোগ করেন।

অগ্নিকাণ্ডে ভবনের কিছু অংশে ফাটল দেখা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাপের কারণে কিছু কলাম দুর্বল হয়ে পড়েছে। কাঠামোটি এখন আংশিকভাবে স্থিতিশীল। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত একটি কাঠামোগত জরিপ পরিচালনা করা।”

তিনি জানান, আগুনের উৎস এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি, তবে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে—তারা বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবে।

ওষুধ ও অন্যান্য পণ্য থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়ে কিছু বাই-প্রোডাক্ট তৈরি হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। “এটি মিরপুরের কেমিক্যাল গোডাউনের মতো তেজস্ক্রিয় কোনো ঘটনা নয়। বাতাসে এখন পর্যন্ত বিপজ্জনক মাত্রা পাওয়া যায়নি,” বলেন তিনি।

ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের দুই সদস্য ও আনসারের কয়েকজন হালকা আহত হয়েছেন বলে জানান তাজুল ইসলাম। “বড় ধরনের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে ধোঁয়া পুরোপুরি না কাটা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের দল এখানেই সতর্ক অবস্থায় থাকবে,” যোগ করেন তিনি।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement