পাকস্থলীর ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো

Published : ২০:২৩, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
পাকস্থলী বা স্টমাক ক্যানসারের হার বর্তমানে ক্রমবর্ধমান। সমস্যা হলো, এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণত চোখে পড়ে না বা গ্যাস্ট্রিক, হজমজনিত সমস্যা বা সাধারণ অস্বস্তির মতো প্রকাশ পায়।
কখনও কখনও খাবারের পরে হালকা অস্বস্তি, যা সাধারণ মনে হয়, তা আসলে পাকস্থলীর ক্যানসারের প্রাথমিক সতর্কতা সংকেতও হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণগুলো এতটা সূক্ষ্ম যে সহজেই উপেক্ষা করা হয়। চলুন জেনে নিই পাকস্থলীর ক্যানসারের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ, যা অনেক সময় মানুষ উপেক্ষা করে থাকেন—
১. হালকা খাবারের পরও ভারী বোধ
সাধারণভাবে অতিরিক্ত খাওয়ার পরে পেট ভারী বোধ হওয়া স্বাভাবিক, তবে যদি হালকা খাবারেও একই অনুভূতি হয়, তা সতর্কতার সঙ্কেত হতে পারে। পাকস্থলীর ক্যানসারে টিউমার পেটের ভিতরে স্থান দখল করতে শুরু করে, ফলে পেটের ক্ষমতা সীমিত হয়। সময়ের সাথে সাথে খাবারের পরিমাণ কমতে থাকে এবং শরীরের ওজন দ্রুত কমতে পারে, যা সাধারণ অ্যাসিডিটি বা হজমজনিত সমস্যায় খুব কমই দেখা যায়।
২. ছড়িয়ে পড়া ব্যথা
পেটের উপরের অংশে বা বুকে অস্বস্তি বা জ্বালা সাধারণত গ্যাস্ট্রাইটিস বা অ্যাসিডিজমের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু পাকস্থলীর ক্যানসারের ক্ষেত্রে ব্যথা ভিন্ন ধরণের হতে পারে। এটি পিঠের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে বা তীব্র জ্বালাপোড়া না হয়ে নিস্তেজ, স্থায়ী, যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা হিসেবে প্রকাশ পায়। অধিকাংশ সময় মানুষ এটিকে উপেক্ষা করে, ধরে নেয় এটি সাধারণ গ্যাস্ট্রিক।
৩. ভিন্ন ধরনের ঢেকুর তোলা
খাবারের পরে ঢেকুর তোলা স্বাভাবিক, তবে যদি তা অস্বাভাবিকভাবে ঘন ঘন হয় বা টক স্বাদ, ধাতব গন্ধ বা হালকা বমি অনুভূতি সহ ঘটে, তা গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। ক্যানসার টিউমার হজমে বাধা সৃষ্টি করলে এমন ঢেকুর হতে পারে, যা সাধারণ গ্যাসের সঙ্গে মেলানো যায় না।
৪. বমি বমি ভাব
অনেকে এটি বদহজমের সাধারণ লক্ষণ হিসেবে উপেক্ষা করে থাকেন। তবে বারবার বমি বমি ভাব দেখা দিলে, এমনকি ভারী বা তৈলাক্ত খাবার না খেলেও, সতর্ক হওয়া উচিত। এটি ইঙ্গিত দিতে পারে যে পেটের আস্তরণে কেবল অ্যাসিড নয়, আরও গুরুতর সমস্যা আছে। বিশেষত যখন ক্ষুধা কমে এবং ক্রমাগত বমি ভাব থাকে, তখন পাকস্থলীর ক্যানসারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
৫. মলের রঙ বা প্যাটার্নের পরিবর্তন
পাকস্থলীর ক্যানসার অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণ হতে পারে, যার ফলে মল গাঢ় বা আলকাতরার মতো রঙের হতে পারে। কখনও কখনও পরিবর্তন সূক্ষ্ম হয়, যেমন সামান্য আঠালো মল বা অস্বাভাবিক গন্ধ। এগুলো সাধারণ অ্যাসিডিটির লক্ষণ নয় এবং দীর্ঘমেয়াদে লক্ষ্য করলে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
এই ৫টি লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে খুব স্পষ্ট নয়, তাই সচেতন হওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো জরুরি। ছোটখাট অস্বস্তি উপেক্ষা করলে সমস্যা বড় আকার ধারণ করতে পারে।
বিডি/এএন