সারজিসের মন্তব্য: অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র

Published : ২১:৪৬, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি ঘটতে থাকা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা এবং অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিদিন একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তাঁর মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিস্টদের দোসরদের শনাক্ত ও শাস্তি দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, তারা অডিও-ভিডিও কলের মাধ্যমে নির্দেশনা পেয়ে এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে গুরুত্বসহকারে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
রংপুর নগরীর তিলোত্তমা হোটেলে জেলা ও উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সমন্বয় সভার শেষে সাংবাদিকদের বক্তব্যে সারজিস আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা যদি সুশীল ও দয়াপ্রবণ মনোভাব থেকে বের হয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন, তাহলে দেশের হাজার হাজার পরিবারকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরসহ অন্যান্য ঘটনার কারণে অনেক পরিবারকে রাস্তায় নামতে হয়েছে। একজনকে সুশীলভাবে প্রশ্রয় দিলে হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই সরকারকে শক্তিশালী ও দৃঢ়ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সারজিস আলম জুলাইয়ের শহীদ পরিবারগুলোর দুর্দশার বিষয়েও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে তাদের সম্মানী প্রদানের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হলেও, জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত না করা, গণহত্যার বিচার, শাপলা চত্বর আন্দোলন, বিডিআর বিদ্রোহের বিচার এবং শহীদ পরিবারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা হলে দায়িত্বশীল নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি মুখোমুখি হতে হয়নি, বরং ছাত্র-জনতার আন্দোলন সরকারের পতন ঘটিয়েছে। সরকারকে তিনি অনুরোধ করেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সমাধান করে নির্বাচন প্রসঙ্গে এগোতে হবে। শুধুমাত্র নির্বাচনের কথায় মনোনিবেশ করলে দেশের মানুষের আস্থা ও সরকারের ইমেজ সংকটাপন্ন হবে।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে এনসিপি নেতা বলেন, দেশের মানুষ চায় জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হোক। যারা স্বাক্ষর করেছে, তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন হবে কি না তা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। বিএনপি কিছু নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, তবে তাদের সঙ্গে কোনো বিরোধিতা নেই। তিনি বলেন, যে দল ক্ষমতায় আসুক, জুলাই সনদের প্রতিটি সংস্কার বাস্তবায়ন করতে বাধ্য থাকবে। যদি এ বিষয়গুলো পাশ কাটিয়ে যায়, জনগণ বিপরীতে অবস্থান নেবে এবং এনসিপি জনগণের পাশে থাকবে।
শাপলা প্রতীকের বিষয়ে তিনি এনসিপির দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেন। কোনো আইনগত বাধা না থাকলেও ইসি যদি স্বৈরাচারী আচরণ দেখায়, এনসিপি রাজপথে এর মোকাবেলা করবে। এনসিপির প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে লিখিতভাবে এই বিষয়ে আলোচনা করেছে এবং আইনজীবীরা জানিয়েছেন, শাপলা প্রতীকের আইনগত কোনো বাধা নেই। এনসিপি আগামী নির্বাচনে শাপলা প্রতীকের মাধ্যমে অংশ নেবে।
সাংগঠনিক বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা, উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে পার্টিকে শক্তিশালী করা হবে। নভেম্বর বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সভায় এনসিপির জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল্লাহ গালিব, মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী সাদিয়া ফারজানা দিনা, নেতা আলমগীর নয়ন, আলমগীর হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি/এএন