‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ নায়িকা কাস্টিং কাহিনি

‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ নায়িকা কাস্টিং কাহিনি ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:১১, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

বলিউডের নামী পরিচালক রাকেশ রোশন মানেই চলচ্চিত্র জগতে এক অনন্য উপস্থিতি। তারই দিক নির্দেশনায় নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তার ছেলে হৃতিক রোশন।

২০০০ সালে রাকেশ রোশনের নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ আজও হৃতিক রোশনের ক্যারিয়ারের একটি মাইলস্টোন হিসেবে বিবেচিত। তবে এই সিনেমার নায়িকা হওয়ার কথা ছিল কারিনা কাপুরের, আর সেটি আজও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মধ্যে আলোচিত একটি অধ্যায়।

সবকিছু প্রথমে ঠিকঠাক চলছিল। সিনেমার শুরুর আগে কারিনাকে নায়িকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং কয়েকটি দৃশ্যও শুটিং করা হয়েছিল। কিন্তু শুটিং শুরু হওয়ার মাত্র চার দিন আগে হঠাৎ করে সবকিছু বদলে যায়। রাকেশ রোশন সিদ্ধান্ত নেন কারিনাকে বাদ দিয়ে নতুন মুখ আমিশা প্যাটেলকে কাস্ট করার।

রাকেশ রোশন নিজেই এক সাক্ষাৎকারে এই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। ২০২০ সালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, শুটিং শুরু হওয়ার আগে ফিল্মিস্তান স্টুডিওতে একটি গানের দৃশ্য দিয়ে শুরু করার পরিকল্পনা ছিল। ঠিক চার দিন আগে কারিনার মা ববিতা শিবদাসানি বলেন, সংলাপ দিয়ে শুটিং শুরু হোক, গান দিয়ে নয়—কারণ কারিনা তখনই পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।

রাকেশ তখন রাজি হননি। তার মতে, গানের দৃশ্য নায়িকার জন্য ক্যামেরার সামনে স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখা সহজ করে। কিন্তু ববিতা কিছুটা জেদ দেখান। রাকেশ তখন বলেন, “এভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। আজ এটা বলবেন, কাল ওটা। বন্ধুত্ব থাক, কাজ না হোক।”

এরপর সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বাড়ে। রাকেশ জানান, অনেকেই বলেন, কারিনাকে পুরো গল্প বলা হয়নি, কিন্তু এটি সত্য নয়। তিনি কোনও অভিনেতাকে সাইন করেন না পুরো ন্যারেশন না দিয়ে। বিশেষত নায়িকাকে অবশ্যই পুরো গল্প জানা থাকে, এবং কারিনাও তিন মাস আগেই পুরো গল্প শুনেছিলেন।

রাকেশ আরও দাবি করেন, কারিনার মা ববিতা মেয়ের ক্যারিয়ারে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ করছিলেন। তার এই হস্তক্ষেপ কম থাকলে কারিনার পক্ষে পরিস্থিতি আরও ভালো হতো। কারণ কারিনা তখন নবাগত, এবং তাকে নিজের জায়গা থেকে শুরু করতে হতো। কারিশ্মা কাপুরের বোন বলে সব সময় নিজের মত চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয় ক্রেডিট টাইটেল নিয়ে। কারিনার মা চেয়েছিলেন, তার মেয়ের নাম হৃতিকের আগে সিনেমার টাইটেলে আসুক। কিন্তু রাকেশ তাতে রাজি হননি। তার যুক্তি, “নায়কই তো সিনেমার মুখ, বিশেষ করে নিজের প্রযোজনায়।”

পরিস্থিতি এমন জটিল হয়ে পড়ে যে রাকেশ সিদ্ধান্ত নেন গ্রিসে উড়ে লোকেশন দেখবেন এবং ততদিনের মধ্যে কারিনার পক্ষ থেকে চূড়ান্ত উত্তর আসুক। কিন্তু ফিরে এসে দেখেন কোনও উত্তর আসে না। এভাবেই বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয়।

পরবর্তীতে কারিনার জায়গায় কাস্ট করা হয় নতুন নায়িকা আমিশা প্যাটেলকে, এবং বাকিটা ইতিহাস। ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ মুক্তি পেয়ে হিট সিনেমা হিসেবে রূপ নেয়। বক্স অফিস সাফল্য ও দর্শকের উন্মাদনার মিলনে হৃতিক রোশন এক নতুন তারকা হিসেবে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement