লায়লা-নাফিসা হত্যার সুরতহাল প্রকাশ

লায়লা-নাফিসা হত্যার সুরতহাল প্রকাশ ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২১:১৮, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ঢাকার মোহাম্মদপুরে মা লায়লা আফরোজ ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সুরতহাল প্রতিবেদন বের হওয়ার পর ঘটনাটি আরও শিউরে ওঠার মতো হয়ে উঠেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, লায়লা আফরোজার দেহে ৩০টিরও বেশি আঘাতের চিহ্ন ছিল। অন্যদিকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসার গলায় চারটি গভীর ক্ষত পাওয়া গেছে। দুজনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত শনাক্ত হয়েছে, যা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাদের মৃত্যু ঘটিয়েছে।

লায়লা আফরোজার শরীরে পাওয়া ক্ষতের বিবরণ অনুযায়ী—বাম গালে তিনটি, থুতনিতে চারটি, গলার নিচে বাম পাশে পাঁচটি, বাম হাতে তিনটি, বাম কব্জিতে একটি, ডান কব্জিতে দুটি, বুকের বাম দিকে নয়টি, পেটের বাম পাশে দুটি এবং তলপেটের নিচে আরেকটি জখম ছিল। এভাবে পুরো শরীরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা আঘাতের ধরন দেখে কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকারী সম্ভবত অনেকটাই প্রশিক্ষিত।

নাফিসার ক্ষেত্রেও বুকের দুই পাশে চারটি গভীর ক্ষত পাওয়া গেছে। নৃশংসতার মাত্রা দেখে তদন্তসংশ্লিষ্ট অনেকেই জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এমন সুরতহাল তারা আর দেখেননি।

ঘটনার পরপরই বাসা তল্লাশিতে বাথরুম থেকে দুটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো দিয়েই মা-মেয়েকে হত্যা করা হয়।

এদিকে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গৃহকর্মী আয়েশা খুনের দিন সকাল ৭টা ৫২ মিনিটে কালো বোরকা পরে বাসায় ঢোকেন। আর ৯টা ৩৬ মিনিটে স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে ভবন ছাড়েন। পুলিশ মনে করছে, এ সময়ের মধ্যেই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

নিহত নাফিসার বাবা এ জেড আজিজুল ইসলাম জানান, মাত্র চার দিন আগে ভবনের তত্ত্বাবধায়ক ও নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে আয়েশাকে কাজে রাখা হয়েছিল। প্রতিদিন সকালে এসে কাজ করে চলে যেত সে। রোববার বাসার মূল দরজার চাবি হারিয়ে যাওয়ার পরও তারা গৃহকর্মীর দিকে সন্দেহ করেননি। মেয়েটি নিজের পরিচয় ও ফোন নম্বর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছিল, তার বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছেন এবং সেও দগ্ধ হয়েছিল।

তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানিয়েছেন, সিসিটিভির প্রতিটি ফ্রেম বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ঘটনার আগে ও পরে গৃহকর্মীর অবস্থান ও চলাফেরা যাচাই করে তদন্ত আরও এগিয়ে নেওয়া হবে।

পুরো ঘটনাটি এখনো তদন্তাধীন, আর নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement