পোশাক শ্রমিকদের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা আনছে নুভিস্তা, বিজিএমইএ ও অলওয়েল
Published : ২০:৫৮, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
দেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মানসিক সহায়তার সুযোগ বাড়াতে একটি ডিজিটাল হাসপাতাল প্রকল্প শুরু হচ্ছে।
নুভিস্তা ফার্মা পিএলসি, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এবং অলওয়েল বিডি লিমিটেড যৌথভাবে এই উদ্যোগ বাস্তাবায়ন করবে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) নুভিস্তা ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম রাব্বুর রেজা, অলওয়েলের চেয়ারম্যান মোজাহেদুল হক আবুল হাসানাত এবং বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান এ সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
ডিজিটাল হাসপাতাল প্রকল্পের অংশ হিসেবে নুভিস্তা ফার্মা শ্রমিকদের, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের জন্য সময়োপযোগী স্ত্রীরোগ, প্রজনন স্বাস্থ্য ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একটি কাঠামোগত রেফারেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্প-কারখানার কর্মীদের জন্য প্রমাণভিত্তিক ও সমতাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিস্তারে প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারকে এই সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করবে বলে জানানো হয়।
নুভিস্তা ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম রাব্বুর রেজা বলেন, ‘প্রতি শ্রমিকেরই মানসম্মত ও সময়মতো স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার আছে। এই সহযোগিতা আমাদেরকে বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের কাছে প্রয়োজনীয় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
ডিজিটাল হাসপাতাল প্ল্যাটফর্মটি পরিচালনা করবে অলওয়েল বিডি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ২৪ ঘণ্টা পরামর্শ, নিরাপদ ইএইচআর ব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় ফলো-আপ ও কারখানার ভেতর সচেতনতামূলক কর্যক্রম পরিচালনা করবে।
অলওয়েলের চেয়ারম্যান মোজাহেদুল হক আবুল হাসানাত বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য যে কোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। আরএমজি কারখানায় আমাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যুক্ত হওয়ার ফলে শ্রমিকরা চিকিৎসা নিতে যে প্রচলিত বাধায় পড়েন, তা কমে আসবে এবং একটি রেসপন্সিভ স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে উঠবে।’
বিজিএমইএ কারখানাগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, মানবসম্পদ ও কমপ্লায়েন্স টিমকে সহায়তা করা এবং শ্রমিকদের সঙ্গে কার্যকরভাবে যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করবে।
বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান বলেন, ‘শ্রমিক কল্যাণে উদ্ভাবনী ও কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা আনতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারখানার ভেতরেই ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হলে অপ্রয়োজনীয় অবহেলা বা অনিরাময়িত সমস্যা কমবে এবং শ্রমিকদের সামগ্রিক সুস্থতা বাড়বে।’
প্রকল্পের প্রথম ধাপে নির্বাচিত কারখানার পাঁচ হাজার শ্রমিক যুক্ত হবে এবং তিন মাসের মধ্যে এ সংখ্যা বাড়িয়ে দশ হাজারে নেওয়া হবে। অংশগ্রহণকারী শ্রমিকরা এক বছরের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। ভবিষ্যতে প্রকল্পটি আরও সম্প্রসারণ করা হবে কর্মপরিধি ও ফলাফল মূল্যায়নের ভিত্তিতে।
সমঝোতা অনুযায়ী, তিন প্রতিষ্ঠানই ত্রৈমাসিক অগ্রগতি প্রতিবেদন, তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিতকরণ, সেবার মান ও প্রকল্পের সম্প্রসারণযোগ্যতা—সবকিছু যৌথভাবে তদারকি করবে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে কর্মক্ষেত্রভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদারে এই সহযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নুভিস্তা ফার্মার স্বাস্থ্যসেবা নেতৃত্ব, অলওয়েলের ডিজিটাল সক্ষমতা এবং বিজিএমইএর শিল্পভিত্তিক পরিসরকে একত্রিত করে ডিজিটাল হাসপাতাল পাইলট প্রকল্পটি শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য, অনুপস্থিতি কমানো এবং কারখানাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার নতুন মানদণ্ড গঠনে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিডি/এএন


































