আগামী ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন ঘিরে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে।
তামিম ইকবালের নেতৃত্বে ১৬ জন প্রার্থী একযোগে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার পর এবার ‘কারচুপির আশঙ্কা’ ও ‘ভোটারদের গোপনে আটকে রাখার’ অভিযোগ তুলে আরও দুই প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা হলেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাদল এবং রাজশাহী বিভাগের প্রতিনিধি হাসিবুল আলম। তাদের সরে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লুৎফর রহমান বাদল বলেন,
“আমি বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সময় হলে জানাবো, কেন এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। একাধিক প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি বড় উদাহরণ হতে পারতো।”
তবে আরও সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন রাজশাহীর প্রার্থী হাসিবুল আলম। তিনি অভিযোগ করেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী মুখলেছুর রহমান রাজশাহীর কাউন্সিলরদের ঢাকার একটি হোটেলে গোপনে আটকে রেখেছেন।
হাসিবুল বলেন,
“একটি বিদেশি নম্বর থেকে জানতে পারি রাজশাহীর ভোটাররা ঢাকার ইউনিক রিজেন্সি হোটেলে অবস্থান করছেন। আমি লোক পাঠিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। আমি ভোটারদের পাচ্ছি না, তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। এটা কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, বরং সম্পূর্ণ প্রহসন। তাই আমি স্বেচ্ছায় এই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ালাম।”
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে, ফলে ব্যালট পেপারে তাদের নাম থাকবে। কিন্তু নিজেদের এই ঘোষণার মাধ্যমে তারা কার্যত নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে দাঁড়ালেন।
এর আগে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে থাকা ১৬ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন। বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল তৃতীয় বিভাগের ১৫টি ক্লাব, যাদের ভোটাধিকার নিয়ে তামিম পক্ষ আপত্তি তোলে। পরে সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের করা রিটের ভিত্তিতে আদালত ঐ ১৫টি ক্লাবকে ভোটে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেয়, যা পুরো প্রক্রিয়াকে আরও অনিশ্চিত করে তোলে।
সব মিলিয়ে, একের পর এক প্রার্থীর সরে দাঁড়ানো, ভোট কারচুপির অভিযোগ এবং প্রশাসনিক দ্বন্দ্বে জর্জরিত অবস্থায় আগামী সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিসিবির বহুল আলোচিত এই নির্বাচন, যা ইতোমধ্যেই দেশীয় ক্রিকেট অঙ্গনে গভীর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।