লাল-সবুজের পতাকা হাতে ১৮০ দেশ ভ্রমণ, গর্বিত নাজমুন নাহার

লাল-সবুজের পতাকা হাতে ১৮০ দেশ ভ্রমণ, গর্বিত নাজমুন নাহার

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৮:০৫, ২৩ আগস্ট ২০২৫

অজানা পথে হাঁটার আকর্ষণ, নতুন মানুষ দেখা আর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি জানার তাগিদই মানুষকে নিয়ে যায় পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। সেই টানে স্বপ্নকে বাস্তব করেছেন বাংলাদেশি পরিব্রাজক নাজমুন নাহার। একের পর এক দেশ ভ্রমণ শেষে তিনি এবার ছুঁয়েছেন ১৮০টি দেশের মাটি।

সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ তিমুর-লেস্তে সফরের মধ্য দিয়ে তার এই নতুন অধ্যায়ের সূচনা। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন  দিলির সর্বোচ্চ শিখরে দাঁড়িয়ে আছি আমি, বুকভরা লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে। ডানদিকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ, বামদিকে ইন্দোনেশিয়া, সামনে অসীম নীল সাগর। বিকেলের আলো পাহাড়ের গায়ে ঢলে পড়ছে, সূর্য যেন নিভু-নিভু প্রদীপের মতো বিদায় নিচ্ছে। আমি খুঁজে নিয়েছি ক্রিস্টো রেই পাহাড়চূড়া  শতাধিক সিঁড়ি বেয়ে কঠিন হাইকিং শেষে দাঁড়িয়েছি শীর্ষে।

চূড়া থেকে যখন চোখ মেলে তাকালেন, প্রকৃতি যেন তাকে অভিবাদন জানাল। পাহাড়ের ঢালে আঁকাবাঁকা পথ নেমে গেছে সমুদ্রের দিকে, ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে নীলাভ পাথরে। আর বাতাসের ছন্দ যেন ক্লান্ত শরীরে নতুন সজীবতা যোগ করছিল। নাজমুন লিখেছেন  প্রকৃতির এই অমূল্য ভাণ্ডার পেতে হলে ঘাম, কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করতেই হয়।

তার কাছে প্রতিটি দেশ ভ্রমণ মানে শুধু আনন্দ নয়, বরং একেকটি সংগ্রাম আর স্বপ্নপূরণের যুদ্ধক্ষেত্র। কারণ প্রতিটি পদক্ষেপ এসেছে অগণিত ত্যাগ, কঠিন পথচলা আর দৃঢ় প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে।

তিমুর-লেস্তে সফর তাকে নতুনভাবে নাড়া দিয়েছে। কারণ এই দেশও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে বহুদিন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ঔপনিবেশিক শাসন আর ২৪ বছরের ইন্দোনেশিয়ান দখলদারিত্ব শেষে ২০০২ সালের ২০ মে তারা স্বাধীনতা অর্জন করে বিশ্বের নবীনতম রাষ্ট্র হিসেবে। এখানকার প্রতিটি রাস্তা, প্রতিটি হাসি আর প্রতিটি গল্পের আড়ালে লুকিয়ে আছে সেই রক্ত-ঘামের ইতিহাস।

এই জাতির সাহস ও অবিচলতা তাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। তার মনে হয়েছে   নিজের ভ্রমণ সংগ্রাম আর তিমুর-লেস্তের স্বাধীনতার গল্প যেন কোথাও একাকার হয়ে গেছে। তাই ১৮ কোটি বাংলাদেশির লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে ১৮০তম দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে গর্বিত অনুভব করেছেন তিনি।

তার কথায়  আমিও যুদ্ধ করি স্বপ্নপূরণের জন্য, প্রতিটি সীমান্ত অতিক্রম করে লাল-সবুজকে পৌঁছে দিতে চাই নতুন দিগন্তে। ভ্রমণের প্রতিটি কষ্ট আমার কাছে বিজয়ের হাসি হয়ে ওঠে, যখনই এমন চূড়ায় দাঁড়িয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখি।

নাজমুন নাহারের কাছে ভ্রমণ শুধু পথচলা নয়  এটা শেখা, জানা এবং নিজেকে সমৃদ্ধ করার নিরন্তর প্রক্রিয়া। তিমুর-লেস্তের পাহাড়, সমুদ্র আর সংগ্রামের ইতিহাস তাকে আরও দৃঢ় করেছে। তার কাছে পৃথিবীর প্রতিটি ত্যাগ, প্রতিটি কষ্ট শেষমেশ প্রকৃতির কোলে এসে বিজয়ের আনন্দে রূপ নেয়। তখনই তিনি অনুভব করেন  স্বপ্ন সত্যিই ছোঁয়া যায়।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement