পঞ্চগড়ের আফসার আলীর নিউটনের তৃতীয় সূত্র নিয়ে বিতর্কিত দাবি ও দীর্ঘদিনের গবেষণা

Published : ১৩:২৭, ১২ আগস্ট ২০২৫
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার আফসার আলী নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রের তৃতীয় সূত্রকে ভুল ও কাল্পনিক দাবি করেছেন। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে কর্মরত এই গবেষক ১৯৯৬ সাল থেকে একটি নতুন যান্ত্রিক সূত্র আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন যা জ্বালানি বা বিদ্যুৎ ছাড়াই ইঞ্জিন চালাতে সক্ষম। সরকারি ও শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষায় তার আবিষ্কার যাচাই হয়নি। স্থানীয় স্কুল প্রধান শিক্ষক ও বিজ্ঞানী সমাজ তাকে সরকারি বা সামাজিকভাবে গবেষণা করার সুযোগ প্রদানের পরামর্শ দিয়েছেন।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার আফসার আলী, যিনি ১৯৭৯ থেকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে কর্মরত ছিলেন, সম্প্রতি আইজ্যাক নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র নিয়ে তার নিজস্ব মত প্রকাশ করেছেন। তিনি নিউটনের গতির প্রথম সূত্রকে সঠিক হলেও অসম্পূর্ণ, দ্বিতীয় সূত্রকে পুরোপুরি সঠিক এবং তৃতীয় সূত্রকে কাল্পনিক দাবি করেন। তার মতে, তৃতীয় সূত্রের বদলে প্রত্যেক ক্রিয়ার সাথে ঘর্ষণ, বাধা ও প্রতিক্রিয়া থাকা উচিত যা বস্তু স্থিতিশীল রাখে।
১৯৭৫ সালে এসএসসি পাস ও ১৯৭৮ সালে টেকনিক্যাল স্কুল থেকে শিক্ষা শেষ করার পর দীর্ঘদিন নিজের তত্ত্ব নিয়ে কাজ করেছেন আফসার আলী। ১৯৯৬ সালে তিনি একটি নতুন যান্ত্রিক সূত্র আবিষ্কার করেন যা ইউ-আকৃতির সিলিন্ডার ব্যবহার করে পানির পতন থেকে শক্তি উৎপাদনের মাধ্যমে জ্বালানি ছাড়া ইঞ্জিন চালানো সম্ভব করবে বলে দাবি করেন। এ জন্য তিনি ব্যক্তিগত অর্থ ব্যয় করে ডিজেল ইঞ্জিন কিনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ও হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তার গবেষণার প্রমাণ যাচাইয়ের জন্য যোগাযোগ করলেও আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা হয়নি। তিনি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা চান যেন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার সুযোগ পান।
তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজনগর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন জানান, আফসার আলী দীর্ঘদিন নিউটনের তৃতীয় সূত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এবং এটি ভুল ব্যাখ্যা করছেন। তিনি বলেন, বিজ্ঞান প্রমাণ নির্ভর, তাই নতুন তত্ত্ব গ্রহণের আগে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা আবশ্যক। তবে গবেষণায় যদি নতুন সত্যতা আসে, তাহলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। তিনি পরামর্শ দেন সরকারি উদ্যোগে আফসার আলীকে সুযোগ দেয়া যেতে পারে।
আফসার আলীর এই দাবি ও গবেষণা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অবদান রাখতে পারে বলে তিনি আশাবাদী। তবে বিজ্ঞানী সমাজ মনে করছে, এই ধরনের দাবি বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়া গ্রহণযোগ্য নয় এবং সরকারের সমর্থনে গবেষণার যথাযথ মূল্যায়ন প্রয়োজন।
A