৫৬৪ কোটি টাকার হিসাবে গরমিল

৫৬৪ কোটি টাকার হিসাবে গরমিল

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:৩০, ১৮ আগস্ট ২০২৫

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, করোনা পরবর্তী ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যান্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্পে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নেয়া অনেক উদ্যোগ প্রকৃতপক্ষে বাস্তবায়ন হয়নি। নির্ধারিত ৫০ জেলার প্রত্যেকটিতে অন্তত ১০ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউ স্থাপনে লক্ষ্য থাকলেও, শূন্য অগ্রগতিতে শুধুমাত্র ১৩ জেলায় কাজ শুরু হয়েছে। ১৬টি শিশুমেডিকেল (পেডিয়াট্রিক) এবং ১৫টি মাতৃদুগ্ধ (অবস্টেট্রিক) আইসিইউ স্থাপনে কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। পাশাপাশি, নির্ধারিত ২০-শয্যা বিশিষ্ট এক হাজার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণে কোনো অগ্রগতি পাওয়া যায়নি—তবু গত পাঁচ বছরে প্রকল্পে ৫৬৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে এবং সেই সম্পূর্ণ হিসাববিবরণ নিয়ে জোরালো প্রশ্ন উঠেছে।

প্রকল্প অধিদপ্তর থেকে ৭৬টি অডিট আপত্তি জমা পড়েছে, কিন্তু প্রকল্প অফিস মাত্র আটটির জবাব দিয়েছে; বাকি বিষয়ে এখনও কোনো সমাধান বা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

IJEMD (পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন সীমান্তকারী সংস্থা) সূত্রের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের সময়সীমা ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার। কিন্তু প্রকল্প অফিস সময়মতো পূর্ত কাজ শুরু করতে পারেনি—যার ফলে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও অবকাঠামো নির্মাণে প্রবল ব্যর্থতা হয়েছে।

যেসব লাইট সংস্করণে আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে, সেখানেও মানুষের অভাব, যন্ত্রপাতি ঘাটতি এবং অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা লক্ষণীয়। কুমিল্লা, যশোর, টাঙ্গাইল ও বরিশালসহ জেলার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ থাকলেও চিকিৎসক, নার্স বা অনুসারী যন্ত্রপাতি নেই, ফলে সেবা কার্যত বন্ধ।

অধিকন্তু, আইসিইউ নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত গণপূর্ত অধিদপ্তর (PWD) অনেক জায়গায় সময়মতো সিভিল কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি। সক্রিয় আইসিইউ ইউনিট যেখানে তৈরি হয়েছে, সেখানেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় যন্ত্রপাতি বসানো যায়নি—যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ কক্ষে সঠিকভাবে লিফট না থাকায় রোগীরা ইউনিটে যেতে পারছিলেন না।

অপরদিকে, মানবসম্পদ সংকট দেখা দেয়। নার্স, চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ প্রকল্প অনুসারে হয়নি। প্রকল্প আয়োজনে অন্তত ৫০০ নার্স, ২০০ চিকিৎসক এবং সমপরিমাণ টেকনিশিয়ান নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, কিন্তু পাঁচ বছরের কাজেও তা পূরণ হয়নি।

সর্বশেষে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, পুরো প্রকল্পেই লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়—অর্থটি ব্যয় হয়েছে, তবে অবকাঠামো বা সেবার বাস্তব উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়নি।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement