আপু’ ডাকায় চিকিৎসকের ক্ষোভ, রোগীকে অভিভাবকসহ বের করে দিল চিকিৎসক

Published : ২৩:১৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শেরপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে এক রোগীকে ‘আপু’ বলে ডাকায় অভিভাবকসহ কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগকারী রোগীর বাবা কাজী মাসুম জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে তার ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মামিয়া হঠাৎ তীব্র পেটব্যথায় আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগে উপস্থিত চিকিৎসক ডা. অনন্যা তাকে কিছু ওষুধ লিখে দেন।
কাজী মাসুম বলেন, হাসপাতালের ভেতরে ওষুধগুলো না পেয়ে বাইরে দোকানে খুঁজতে বের হই। একটি ওষুধ না পাওয়ায় প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবার হাসপাতালে ফিরে জরুরি বিভাগের কক্ষে প্রবেশ করি। এ সময় দেখি, আগের ডাক্তার ডা. অনন্যা ডিউটি শেষ করে চলে গেছেন। তার স্থলে ডিউটিতে ছিলেন ডা. মারজিয়া খাতুন।
তিনি আরও বলেন, আমি বিনয়ের সঙ্গে ডা. মারজিয়াকে ‘আপু’ সম্বোধন করে বলি—আগের ডাক্তার একটি ওষুধ লিখেছিলেন, যেটি পাওয়া যাচ্ছে না, অন্য কোনো বিকল্প ওষুধ দেওয়া যায় কি না। এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই ডা. মারজিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং বলেন, “আপু কেন বলছেন? আমি মেডিকেল অফিসার। বের হয়ে যান।” পরে কয়েকবার ধমক দিয়ে আমাকে ও আমার মেয়েকে কক্ষ থেকে বের করে দেন।
এদিকে উপস্থিত অন্যান্য রোগী ও স্বজনরা অভিযোগ করেন, শুধু ডা. মারজিয়াই নন হাসপাতালের অনেক চিকিৎসকই রোগী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে অমানবিক ও দুর্ব্যবহার করে থাকেন।
ঘটনার পর দুপুর ৩টার দিকে কয়েকজন সাংবাদিক ডা. মারজিয়ার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান, “আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলব না।”
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাহেরাতুল আশরাফি বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। হয়তো ভুলক্রমে তিনি এ ধরনের কথা বলেছেন। তবে অফিসিয়ালি অভিযোগ জানাতে হলে শনিবার আসতে হবে।”
এ বিষয়ে শেরপুর জেলা সিভিল সার্জন মুহাম্মদ শাহীন কালবেলাকে বলেন, “এ ঘটনা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। রোগী বা স্বজনকে এভাবে কথা বলা কিংবা কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া কোনোভাবেই শোভনীয় নয়। হাসপাতালে গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ আসবে। তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণের সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে আমি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি।”
BD/AN