সাংবাদিকদের ‘সন্ত্রাসী’ বলায় অভিযুক্ত সেই ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

Published : ২০:৫৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে ‘সন্ত্রাসী’ বলে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পরপরই তাকে করতোয়া নদীর আওলিয়া ঘাটের দায়িত্ব থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও মহালয়ার অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীর আওলিয়া ঘাটে মহালয়ার দিন শতাধিক যাত্রীবোঝাই নৌকা ডুবে যায়। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৭১ জন প্রাণ হারান। রোববার সেই নৌকাডুবির তিন বছর পূর্তিতে সংবাদ সংগ্রহে যান ৬–৭ জন সাংবাদিক।
সেখানে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমান সাংবাদিকদের নৌকায় উঠতে বাঁধা দেন। অথচ একই সময়ে একাধিক নৌকা চলাচল করছিল এবং সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি মোটরসাইকেলও পারাপার হচ্ছিল। কিন্তু সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া হলে তারা প্রশ্ন তোলেন।
প্রশ্নের মুখে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন—“আপনি আল জাজিরার সাংবাদিক হন বা যেই হন, আমার কিছু যায় আসে না। যেতে পারবেন না।” এমনকি সাংবাদিকদের ক্যামেরা লক্ষ্য করে আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আপনারা সন্ত্রাসী, আপনাদের কর্মকাণ্ড সন্ত্রাসী।”
প্রকাশ্যে এভাবে অপমানজনক মন্তব্যে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি ফাহিম হাসান অভিযোগ করেন, ঘাটে কোনো ভিড় ছিল না। অন্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে পারলেও সাংবাদিকদের যেতে দেওয়া হয়নি।
কালবেলার সাংবাদিক মোশারফ হোসেন বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও আমাদের ‘সন্ত্রাসী’ বলা হয়েছে। এটি চরম অপমানজনক।
ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান জানান, ইউএনও নিজেও নৌকায় মোটরসাইকেল নিয়ে পার হচ্ছিলেন। কিন্তু সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া হয়েছে কেন, তা বোধগম্য নয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “কি পারেন করেন।”
এ প্রসঙ্গে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী জানান, ঘটনার পরপরই এসি ও ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমানকে আওলিয়া ঘাটের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
BD/AN