এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের মুখে সাংবাদিক ‘সন্ত্রাসী’ তকমা

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের মুখে সাংবাদিক ‘সন্ত্রাসী’ তকমা ছবি: বিজনেস ডেইলি

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৯:২০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে ‘সন্ত্রাসী’ বলে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীর আওলিয়া ঘাটে মহালয়া উপলক্ষে যাত্রীবোঝাই নৌকা ডুবে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৭১ জনের প্রাণহানি ঘটে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সেই মর্মান্তিক নৌকাডুবির তিন বছর পূর্ণ হয়। এ উপলক্ষে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ৬–৭ জন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যান।

তখন করতোয়া নদীর ঘাটে দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান সাংবাদিকদের নৌকায় পারাপারের পথে বাধা দেন। যদিও তখন নদীতে ৩-৪টি নৌকা চলাচল করছিল এবং নৌকায় মোটরসাইকেল নিয়েও যাতায়াত হচ্ছিল। কিন্তু সাংবাদিকরা নৌকায় উঠতে চাইলে তিনি সরাসরি নিষেধ করেন এবং জানান মোটরসাইকেল নেওয়া যাবে না।

সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন, “যখন অন্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে পার হচ্ছে, আমরা কেন সংবাদ সংগ্রহের কাজে যেতে পারব না?” এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “আপনি আল জাজিরার সাংবাদিক হন কিংবা আন্তর্জাতিক সাংবাদিক হন, আমার কিছু যায় আসে না। যেতে পারবেন না।”

এরপর বিষয়টি সাংবাদিকরা ক্যামেরায় রেকর্ড করলে কিছুক্ষণ পরেই ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরও অশালীন মন্তব্য করেন, “আপনারা সন্ত্রাসী।” শতাধিক মানুষের সামনে সাংবাদিকদের এভাবে অপমানিত করার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান বলেন, “আমরা মহালয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে বাঁধা দেন। অথচ ঘাটে তখন পর্যাপ্ত জায়গা ছিল এবং অনেককেই মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপার হতে দেখা গেছে। এমনকি ইউএনও নিজেও নৌকায় মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপার করছিলেন। তাহলে সাংবাদিকদের যেতে বাধা কেন?”

দৈনিক আজকের পত্রিকার সাংবাদিক ফাহিম হাসান বলেন, “আমরা সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরই তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ‘আল জাজিরা সাংবাদিক হন, যে সাংবাদিক হন, যেতে পারবেন না।’ এরপর প্রতিবাদ করলে তিনি আমাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা তো সন্ত্রাসী।’ তিনি এভাবে একাধিক সাংবাদিককে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম। সাংবাদিকরা তার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি সংক্ষিপ্তভাবে বলেন- “কি পারেন করেন।”

এ বিষয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী জানান, “ঘটনার পরপরই ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমানকে আওলিয়া ঘাটের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।”

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement