সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে মারধর

সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে মারধর ছবি: বিজনেস ডেইলি

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২১:৪২, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে নগর ভবনে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ২১ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর নগরীর কাচারিবাজার থেকে একুশে টেলিভিশন ও দৈনিক সংবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক লিয়াকত আলী বাদলকে নগর ভবনে তুলে আনা হয়। সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল অভিযোগ করেন, তাকে জোর করে তুলে এনে মারধর ও হেনস্তা করা হয়েছে।

পরে সংবাদ প্রকাশের জন্য ভুল স্বীকার করে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতিমার কাছে ক্ষমা চাইতে চাপ দেওয়া হয়। ঘটনা জানাজানি হলে রংপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা নগর ভবনে ছুটে যান। তাৎক্ষণিক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তারা প্রধান নির্বাহীর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

এসময় সাংবাদিকরা জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমার অপসারণ দাবি করেন। মারধরের শিকার সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল অভিযোগ করেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে জাহাজ কোম্পানি মোড় এনায়েত রকির নেতৃত্বে ১৫-২০ জন তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে।

এ ঘটনায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক শহিদুল ইসলাম ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা ইন্ধন দিয়েছেন। বাদল বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি দৈনিক সংবাদে রংপুরে জুলাই যোদ্ধাদের নামে অটোরিকশার লাইসেন্স, ৫ কোটি টাকা বাণিজ্যে পাঁয়তারা শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন।

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কাচারিবাজার মোড়ে উপস্থিত থাকার সময় জুলাইযোদ্ধা পরিচয়দানকারী এনায়েত রকি ফোন করে তার অবস্থান জেনে দলবলসহ সেখানে পৌঁছান। পরে তাকে সিটি কর্পোরেশনে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয় ও মারধর করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে এনায়েত রকি নিজেকে জুলাই আন্দোলনের একজন রাজবন্দি সৈনিক দাবি করে বলেন, আমাদের কর্মসংস্থানের সুব্যবস্থার জন্য যদি সরকারি কোনো অর্থায়ন কেউ কোনো দিক দিয়ে করে, তবে সেটাকে নিয়ে লেখালিখি করার দরকার আাছে? তার দাবি, ওই সাংবাদিককে আপসে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে কোনো অসম্মান করা হয়নি।

লিয়াকত আলী বাদল বলেন, রকি ও তার সঙ্গে থাকা লোকরা তাকে টেনেহেঁচড়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমার কক্ষের কাছে নিয়ে যান। এসময় জোর করে ওই রুমে ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তখন তারা ওই সংবাদ প্রকাশের জন্য ভুল স্বীকার করতে বলেন।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরপিইউজে) সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক বলেন, পাঁচ আগস্টের পর সাংবাদিকদের ওপর এমন আচরণ ফ্যাসিস্ট হাসিনার যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতিমাকে প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতিমা বলেন, এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। নিউজের জন্য মাফ চাইতে সাংবাদিকদের নিয়ে আসার প্রশ্নই ওঠে না। মহানগর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় একজনের নাম আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে অন্যদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement