কেরানীগঞ্জে মাদরাসা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

কেরানীগঞ্জে মাদরাসা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ০২:১০, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি মাদরাসা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় মাদরাসার একতলা ভবনের কয়েকটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে।

ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, বিভিন্ন কেমিক্যাল এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় অবস্থিত উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার একতলা ভবনে এই বিস্ফোরণ ঘটে।

এ ঘটনায় মাদরাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তার স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাদের তিন সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে—উমায়েত (১০) ও আব্দুল্লাহ (৭)—আহত হন। আহতদের মধ্যে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরের দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই ভবনের চারপাশের দেয়াল ভেঙে পড়ে। একতলা ভবনের অন্তত দুটি কক্ষের দেয়াল পুরোপুরি ধসে যায় এবং ছাদ ও বিমে বড় ধরনের ফাটল দেখা দেয়। পাশের আরও দুটি কক্ষেও ফাটল ধরেছে। পাশাপাশি সংলগ্ন একটি ভবনের দেয়াল ও জানালাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানা গেছে, ভবনের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম চলত। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন পরিবারসহ গত তিন বছর ধরে বসবাস করছিলেন। মাদরাসাটিতে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, বিস্ফোরণে তাদের ভবনের অংশবিশেষ ফেটে গেছে এবং ঘরের ভেতরের আসবাবপত্র ভেঙে পড়েছে। আরেক বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, তিনি গ্যারেজে গাড়ি রেখে বাসায় ফিরছিলেন, এমন সময় বিস্ফোরণে ওপর থেকে ইট পড়ে তার মাথায় লাগে এবং তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

বাড়ির মালিক পারভীন বেগম জানান, গত তিন বছর ধরে তার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন মাদরাসাটি পরিচালনা করতেন। তিনি মাদরাসার দায়িত্ব দিয়েছিলেন তার শ্যালক শেখ আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে। হারুন মাঝেমধ্যে সেখানে আসতেন। তিনি দাবি করেন, নিয়মিত খোঁজখবর নিলেও মাদরাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা তিনি বুঝতে পারেননি। ঘটনাস্থলে এসে তিনি দেখেন ভবনের চারপাশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুলিশ ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে এবং অভিযান এখনও চলমান। ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। পাশাপাশি বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে ক্রাইম সিন ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট একযোগে কাজ করছে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement