কার্তিক আরিয়ান ও অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত নতুন ছবি ‘তু মেরি মঁয় তেরা, মঁয় তেরা তু মেরি’–এর ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
রঙিন ভিজ্যুয়াল, হালকা মেজাজ ও রোমান্টিক আবহে ভরা এই ট্রেলার যেমন কার্তিক–অনন্যার ভক্তদের উচ্ছ্বসিত করেছে, তেমনই সমালোচকদের একটি বড় অংশের প্রশ্নও উসকে দিয়েছে—বলিউড কি ইচ্ছাকৃতভাবেই কার্তিক আরিয়ানকে অতিরিক্তভাবে এগিয়ে দিচ্ছে?
একসময় কার্তিকের কৌতুকধর্মী অভিনয় দর্শকদের মধ্যে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিল। বিশেষ করে ‘প্যায়ার কা পঞ্চনামা’ কিংবা ‘ভুল ভুলাইয়া’–এর মতো ছবিতে তাঁর সংলাপ বলার স্টাইল ও কমেডি টাইমিং প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কাজগুলো নিয়ে দর্শকের একাংশের অভিযোগ, আবেগের গভীরতা প্রকাশে তিনি যেন একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছেন।
চরিত্র বদলালেও সংলাপ বলার ভঙ্গি ও অভিব্যক্তিতে তেমন কোনো নতুনত্ব চোখে পড়ছে না। এই একঘেয়েমিই এখন অনলাইন সমালোচনার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই বিতর্কে কেবল অভিনেতা নন, প্রশ্নের মুখে পড়েছে প্রযোজনা সংস্থাগুলিও। অনেকের ধারণা, বড় প্রচারণা আর ঝকঝকে উপস্থাপনার আড়ালে একই ধরনের গল্প বারবার দর্শকের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। নতুন ভাবনা, ঝুঁকিপূর্ণ গল্প বা বাস্তবধর্মী সিনেমার ঘাটতি স্পষ্ট। কেউ কেউ সাম্প্রতিক কিছু সংবেদনশীল ও বাস্তবঘেঁষা ছবির উদাহরণ টেনে বলছেন, বলিউডের এখন প্রয়োজন বাহুল্য নয়, বরং সাহসী ও নতুন গল্প বলার উদ্যোগ।
সব বিতর্ক সত্ত্বেও ছবিটির মুক্তি সূচিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বড়দিনকে সামনে রেখে মুক্তির লক্ষ্য নির্ধারণ করা এই ছবির পরিচালক কার্তিকের আগের সফল সহযোগী সমীর বিদ্বান্স।
প্রযোজনায় রয়েছে দুটি বড় প্রযোজনা সংস্থা। ফলে বক্স অফিসে ছবিটি কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে আগ্রহ কম নয়। এই ছবি কি কার্তিক আরিয়ানকে ঘিরে তৈরি হওয়া সন্দেহ দূর করতে পারবে, নাকি সমালোচকদের বক্তব্যই আরও শক্তিশালী হবে—তার উত্তর দেবে সময়।
তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, এই ট্রেলার কেবল একটি ছবির প্রচারেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি বলিউডের বর্তমান পরিচয় সংকটকেও নতুন করে সামনে এনেছে। দর্শক এখন নিছক বিনোদনের বাইরে গিয়ে সত্যিকারের অভিনয় ও শক্ত গল্প খুঁজছে—এই বার্তাই যেন আরও জোরালোভাবে উঠে এসেছে।

































