বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সম্প্রতি বলেছেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি উল্লেখ করেন, গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও ইতিবাচক রাজনীতির মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার বিরল সুযোগ এসেছে, যা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলা সম্ভব।
এই মন্তব্য তিনি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা ইউনিয়নের পশ্চিমাঞ্চলের ওয়ার্ডগুলোর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রদান করেন।
প্রিন্স বলেন, বিএনপি মূলত উন্নয়নের রাজনীতি করে। কিন্তু বর্তমানে উন্নয়নভিত্তিক রাজনীতি কার্যকরভাবে পরিচালনার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, যারা দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চায়, তাদের প্রতি সমর্থন দিতে হবে এবং তাদের কাজের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রাজনীতির পুরোনো ধারা বদলাতে চায়। গণ-অভ্যুত্থান কেবল ক্ষমতার হাতবদলের উপায় নয়, বরং রাজনীতি ও রাষ্ট্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার এক শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। গ্যালারিতে বসে রাজনীতির খেলা পর্যবেক্ষণ করলেই চলবে না; মাঠে নেমে সক্রিয়ভাবে দেশকে পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশপ্রেম বিএনপির রাজনীতির চাবিকাঠি, আর জনকল্যাণ দলের ব্রত। আগামী নির্বাচনে জনগণের রায়ে ক্ষমতায় এলে বিএনপি এককভাবে নয়, আন্দোলনের অংশীদার অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে এবং গণ-অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে।
এছাড়া প্রিন্স জানান, বিএনপি সরকার কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। প্রান্তিক কৃষকদের ‘ফার্মার্স কার্ড’-এর মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন খরচ কমানো, ধান সরাসরি ন্যায্যমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে ক্রয়, ঝুঁকি বিবেচনায় শস্য, পশু, মৎস্য ও পোলট্রি বীমা চালু করা হবে।
দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গ্রামীণ হাট-বাজার আধুনিকায়ন করা হবে এবং প্রান্তিক কৃষকের ঋণের সুদ মওকুফ করা হবে।
প্রিন্স আরও বলেন, ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে পল্লী রেশনিং-এর আওতায় আনা হবে। প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি বেকারের জন্য নতুন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে।
শিক্ষিত বেকারদের এক বছরের বেকারভাতা প্রদান এবং অন্যান্য বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রতিটি উপজেলায় কলকারখানা স্থাপন করে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা হবে।
জনগণকে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ধানের শীষের আগামী সরকার জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে এবং কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম সিদ্দিকী।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরফান আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, ময়মনসিংহ কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ এখলাস উদ্দিন খান, কুতিকুড়া কুরুয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেক ইব্রাহিম খান, ধারা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের সিনিয়র প্রভাষক আসাদুজ্জামান আকন্দ,
কৈচাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোজাফফর ইসলাম রাঙ্গা, কুতিকুরা করুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আলহাজ আব্দুল হালিম, শামসুল হুদা, বাবু গোপাল দেবনাথ, হালুয়াঘাট উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাইমুর আরেফিন পাপন এবং উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।