আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম—যে নামটি উচ্চারিত হলেই আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্ক একসঙ্গে চলে আসে। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে নিজের মতো করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
অভিনয়, সামাজিক বার্তা কিংবা নির্বাচনী ময়দান—সবখানেই নিজের উপস্থিতি জানান দিতে কখনো পিছু হটেননি হিরো আলম।
একাধিকবার বিভিন্ন পদে প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসা এই স্বতন্ত্র প্রার্থী আবারও আলোচনায়। ঘোষণা দিয়েছেন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার। তবে এবার আর নিজের এলাকা বগুড়া নয়, ঢাকার ১৭ নম্বর আসন থেকেই লড়বেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা-১৭ আসনটি রাজধানীর অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এলাকা—গুলশান, বনানী, বারিধারা, মহাখালী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও মিরপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন। এই আসনে এবার বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ কয়েকটি দলের শক্ত প্রার্থী রয়েছেন। বিশেষভাবে আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)-এর প্রার্থী আন্দালিব রহমান পার্থ।
এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনেই হিরো আলম আপাতত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান, তবে তার সঙ্গে একাধিক রাজনৈতিক দলের যোগাযোগ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “নির্বাচনে অংশ নেওয়া আমার কাছে কেবল জয়ের বিষয় নয়, এটা একটা প্রতিবাদের ভাষা। আগে যেমন প্রতিবাদ করেছি, এবারও করব। আমি চাই দেশে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। মানুষ যেন উৎসবের মতো ভোট দিতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক দলের নেতার সঙ্গে কথা হচ্ছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করছি—আমার আদর্শ ও তাদের প্রস্তাব মিললে ভাবব, না মিললে স্বতন্ত্র হিসেবেই লড়ব।”
নিজেকে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরে হিরো আলম বলেন, “আমি সংসদে যেতে চাই গরিব, প্রান্তিক ও অবহেলিত মানুষের প্রতিনিধি হয়ে। কারণ দেশের আসল শক্তি ওদের মধ্যেই। তারাই সারাদিন পরিশ্রম করে, কিন্তু রাষ্ট্রীয় সেবা পেতে সবচেয়ে বেশি অবহেলার শিকার হয়। আমি তাদের জন্য কাজ করতে চাই, তাদের পাশে থাকতে চাই।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন হিরো আলম। যাচাই-বাছাইয়ের সময় তার প্রার্থিতা দুই দফা বাতিল হলেও আদালতের আদেশে তা ফিরে পান এবং সিংহ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে নির্বাচনের দিন কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছিলেন তিনি।
পরবর্তীতে ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ও অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনেও অংশ নেন হিরো আলম। সেই নির্বাচনের দিন একটি কেন্দ্রে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় আন্তর্জাতিক মহল। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথ বিবৃতি দিয়ে সেই হামলার নিন্দা জানায়।
সব মিলিয়ে হিরো আলম আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে—এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ময়দানে তার নতুন লড়াই নিয়ে।

				
						
											
											
											
											






























