চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের রহস্য আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দীর্ঘ ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এই মৃত্যুর রহস্য এখনও ঘিরে রয়েছে নানা প্রশ্ন ও জল্পনা।
সম্প্রতি জানা গেছে, মামলার দুই প্রধান আসামি—সালমান শাহের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক এবং চলচ্চিত্রের খলনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল হক ডন দেশেই অবস্থান করছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও তাদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
সালমান শাহের মৃত্যুর পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশের চারটি তদন্ত সংস্থা ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে গত ২১ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে রমনা থানায় নতুন করে হত্যা মামলা করেন সালমান শাহের মামা। এতে আসামি করা হয়েছে মোট ১১ জনকে, যাদের মধ্যে রয়েছেন সামিরা হক, মোহাম্মদ আশরাফুল হক ডন এবং বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
এদিকে সালমান শাহের মা অভিযোগ করেছেন, তার ছেলের মরদেহে রক্তের দাগ দেখা গিয়েছিল। এই বিষয়ে কথা বলেন ময়নাতদন্তে দায়িত্বে থাকা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ সহকারী মোহাম্মদ সেকেন্দার। তিনি বলেন, “সেই সময় গলায় যে দাগগুলো ছিল, সেগুলো আমরা নোট করেছি। পোস্টমর্টেম সম্পূর্ণ নিয়ম অনুযায়ী ও নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা হয়।”
রক্তের দাগ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, “যদি মৃত্যুর আগে রক্ত থাকে, সেটার ছবি নিশ্চয়ই তোলা হয়েছে। আর ময়নাতদন্তের পর রক্ত লাগলে তা নিয়ে কিছু বলার নেই।”
অন্যদিকে, মামলার নতুন মোড় এসেছে এক পুরনো জবানবন্দিকে ঘিরে। মামলার ১১ নম্বর আসামি রেজভি আহমেদ ফরহাদ স্বীকার করেছেন, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানো হয়। তিনি নিজের জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন।
পুলিশ জানায়, সামিরা ও ডন এখনো দেশে আছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তবে তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে কাজ চলছে। ডিএমপি ডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “এজাহারে যাদের নাম রয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তাদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। একবার অবস্থান নির্ধারণ করা গেলে আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারব।”
এরই মধ্যে আদালত আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। অন্যদিকে, সামিরার স্বামী সম্প্রতি উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চিত্রনায়ক সালমান শাহ ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যান। সেই থেকে শুরু হয় এক অমীমাংসিত রহস্যের অধ্যায়, যা এখনও শেষ হয়নি।

































