এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ এখন শুধু শহর নয়, গ্রাম-গঞ্জেও ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতির ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে (শনিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু এবং ৬ হাজার ৫৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিস্তারিত দেখা যায়—৮ নভেম্বর কারও মৃত্যু হয়নি, তবে ৮৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন; ৯ নভেম্বর ছয়জনের মৃত্যু এবং এক হাজার ১৯৫ জন হাসপাতালে ভর্তি; ১০ নভেম্বর দুইজনের মৃত্যু এবং এক হাজার ১৭৯ জন ভর্তি; ১১ নভেম্বর তিনজনের মৃত্যু এবং ৯১২ জন ভর্তি; ১২ নভেম্বর পাঁচজনের মৃত্যু এবং এক হাজার ১৩৯ জন হাসপাতালে ভর্তি; ১৩ নভেম্বর তিনজনের মৃত্যু এবং ৮৩৩ জন হাসপাতালে ভর্তি; ১৪ নভেম্বর কোনো মৃত্যুর ঘটনা না হলেও ৪৬০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
নভেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১৩ হাজার ২০৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৪৮ জনের। চলতি বছর ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের সর্বমোট ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৬৬, যার মধ্যে ৭৯ হাজার ৪৬০ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২৬ জনে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু এখন আর কেবল সিজনাল নয়, বরং সারাবছরই সংক্রমণ হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ প্রয়োগের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনকে শহরের প্রতিটি এলাকায় প্রচারণা চালাতে হবে। এছাড়া জনগণকেও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী জানান, মশানিধনে শুধুমাত্র জরিমানা আর জনসচেতনতা বৃদ্ধি যথেষ্ট হবে না। সঠিক জরিপ ও দক্ষ জনবল নিয়োগ করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখযোগ্য, ২০২৩ সালে দেশে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা বর্তমান পরিস্থিতির তীব্রতার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট করছে।


































