ক্যামেরা বিক্রি করে সন্তানকে খাওয়াচ্ছেন গাজার সাংবাদিক

ক্যামেরা বিক্রি করে সন্তানকে খাওয়াচ্ছেন গাজার সাংবাদিক ছবি : সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:৫১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাজার ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক বশির আবু আলশায়ের। বয়স ৪২। বহু বছর ধরে নিজের ক্যামেরার লেন্সে গাজার ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরছেন তিনি। সাংবাদিকতাই তার একমাত্র জীবিকা। কিন্তু ইসরাইলি অমানবিকতার কারণে এখন তার সন্তানরা পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বশির।

অবশেষে শিশুদের জন্য রুটির জোগান দিতে তিনি বাধ্য হয়ে নিজের প্রিয় ক্যামেরাটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ক্যামেরা বিক্রির পোস্টে বশির লিখেছেন, “এটি কোনো প্রচারণা নয়; এটি এক ডুবে যাওয়া মানুষের খড়কুটো আঁকড়ে ধরার চেষ্টা। এখন এক টুকরো রুটি স্বপ্নের মতো। আমি আমার বাচ্চাদের অনাহারে কষ্ট পেতে দেখেছি। ঘরে একটুকরো খাবারও অবশিষ্ট ছিল না। আমার কাছে ক্যামেরা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।”

তিনি আরও বলেন, “আমার তৃতীয় নয়নের বিনিময়ে হলেও আমার সন্তানদের জীবন বাঁচান।”

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে পুরো অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত পাঁচ লাখ ব্যাগ আটার প্রয়োজন।

অন্যদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এখন পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন ১৮৮ জন মানুষ, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। প্রতিদিনই অপুষ্টি ও ক্ষুধাজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিক আহমেদ আবদেল আজিজ বলেন, “গাজার অবস্থা অকল্পনীয়। ক্ষুধার যন্ত্রণায় মানুষ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছে। সহায়তা কেন্দ্রগুলো এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।”

পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য আহমেদকে তার মাইক্রোফোন বিক্রি করতে হয়েছিল। কিন্তু সেই অর্থে পরিবার মাত্র দুই দিনের খাবার পেয়েছিল। এখন তিনি নিজ ক্যামেরা বিক্রির কথাও ভাবছেন।

তার ভাষায়, “আমরা শুধু যুদ্ধ নথিভুক্ত করি না বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সরঞ্জামও বিক্রি করি।” বর্তমানে এক কেজি আটার দাম দাঁড়িয়েছে ১০০ শেকেল বা প্রায় ২৯ ডলার। আয়ের কোনো উৎস না থাকায় এটি এখন অসহনীয় ব্যয়।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement