ধ্বংসস্তূপের মাঝেই লাইভে যুদ্ধের সাক্ষী হানি মাহমুদ

Published : ১৭:০১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আলো ঝলমলে স্টুডিও নয়, সযত্নে সাজানো ক্যামেরার সেট নয় হানি মাহমুদের সংবাদমঞ্চ হয়ে উঠেছে ভাঙা ভবনের ধ্বংসস্তূপ, আগুনে পুড়ে যাওয়া রাস্তাঘাট আর আতঙ্কে দৌড়ানো সাধারণ মানুষের ভিড়। তিনি একজন সংবাদদাতা, দায়িত্ব তার সত্যকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা। আর সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই হঠাৎ সাক্ষী হয়ে গেলেন এক ভয়াবহ বোমা হামলার।
দক্ষিণ গাজার রাফাহ। রোববার আল জাজিরার ক্যামেরায় লাইভে ধ্বংসযজ্ঞের ছবি তুলে ধরছিলেন হানি মাহমুদ। তিনি বলছিলেন “গাজার ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক ভবনে একের পর এক বোমা হামলায় পরিবারগুলো বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর আকাশ কাঁপিয়ে পড়ছে বোমা।”
কথা শেষ হতেই হঠাৎ কেঁপে উঠলো চারদিক। আকাশ ফুঁড়ে ভয়াল শব্দ। মুহূর্তেই আগুন আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল পেছনের দৃশ্যপট। ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানলো তার পেছনের ভবনগুলোতে। দক্ষিণ গাজার কুয়েতি হাসপাতাল থেকে মানুষ ছুটে পালাচ্ছে, কেউ রক্তাক্ত শিশু কোলে নিয়ে দৌড়াচ্ছে, কেউবা কান্নায় ভেঙে পড়ছে সবই ধরা দিল সরাসরি সম্প্রচারে।
ক্যামেরার সামনেই মাথা নিচু করে বাঁচার চেষ্টা করলেন হানি মাহমুদ। চারদিকে শুধু ধ্বংস, আতঙ্ক আর শোক। তবুও থামলেন না তিনি। পৃথিবী প্রত্যক্ষ করলো যুদ্ধক্ষেত্রের সাংবাদিকতার এক ভয়াবহ বাস্তবতা।
তিনি জানতেন সাংবাদিকতার দায়িত্ব শুধু তথ্য দেওয়া নয়, মানুষের কান্না-আর্তনাদ বিশ্ববাসীর কানে পৌঁছে দেওয়া। সেই অঙ্গীকারেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি চালিয়ে গেলেন সম্প্রচার।
এ যেন ইতিহাসের এক জীবন্ত দৃশ্যপট, যেখানে একজন সাংবাদিক নিজের নিরাপত্তাকে পেছনে ফেলে দাঁড়িয়ে গেলেন সত্যের সাক্ষ্যে।
গাজার আকাশ এখনো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন, মাটিতে ছড়িয়ে আছে আহত-নিহতের হাহাকার। আর এই ধ্বংসস্তূপের ভেতরেই পৃথিবী মনে রাখলো একটি নাম হানি মাহমুদ। তিনি সরাসরি সম্প্রচারে সাক্ষী হয়েছিলেন যুদ্ধের নৃশংসতার।
BD/AN