পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে কমপ্লিট শাটডাউন পঞ্চম দিন, নিহত ৯

পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে কমপ্লিট শাটডাউন পঞ্চম দিন, নিহত ৯ ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৯:৫৬, ৩ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে অশান্তি: ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পঞ্চম দিনেও সহিংসতা, নিহত ৯

পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের অবস্থা আরও উত্তপ্ত। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর পঞ্চম দিনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালীন উভয়পক্ষের আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে।

পাকিস্তান সরকার বৃহস্পতিবার আজাদ কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদে একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, যা জম্মু-কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (JAAC)-এর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবে। জেএএসি হলো তৃণমূল স্তরের অসন্তোষের কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের একটি সংগঠন।

জেএএসি নেতা শওকত নওয়াজ মীরের নেতৃত্বে ২৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর ফলে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জেলা কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। পাকিস্তান সরকার ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করেছে।

মুজাফ্ফরাবাদের বাজারগুলো বন্ধ, রাস্তায় বিক্রেতা বা গণপরিবহন দেখা যায়নি। এই অচলাবস্থায় প্রায় ৪০ লাখের বেশি বাসিন্দা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। সরকার জনসাধারণকে ‘নির্দিষ্ট এজেন্ডার’ প্রচারণা এবং ভুয়া খবর থেকে প্রভাবিত না হওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।

জেএএসি এর আগে দুই বছরের মধ্যে তৃতীয়বার বড় সমাবেশ আয়োজন করেছে। তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হওয়ায় তারা প্রতিবাদে নামেছে।

কাশ্মীর উপত্যকা দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারত একাধিক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের নিজস্ব প্রধানমন্ত্রী এবং আইনসভা রয়েছে।

অস্থিরতার সূত্রপাত ২০২৩ সালের মে মাসে, যখন বাসিন্দারা বিদ্যুৎ বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে। একই সঙ্গে আটা চোরাচালান ও ভর্তুকিযুক্ত গমের ঘাটতির অভিযোগ ওঠে। সেপ্টেম্বরে জেএএসি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২৪ সালের মে মাসে প্রথম বড় লং মার্চে সহিংস সংঘর্ষে একজন পুলিশসহ কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বিদ্যুৎ ও আটার দাম কমানোর জন্য সহমত হন। তবে শান্তি ক্ষণস্থায়ী প্রমাণিত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্টে জেএএসি ঘোষণা করে নতুন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর। এবার দাবির তালিকায় ৩৮টি সুস্পষ্ট দফা রয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করে। সরকারি প্রতিনিধি ও জেএএসি সদস্যদের মধ্যে আলোচনা কোনো সমাধান ছাড়াই শেষ হয়। আজ শুক্রবার নতুন দফা আলোচনার জন্য নির্ধারিত।

দুই পক্ষই সংলাপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু বারবার হতাশা ও বিশ্বাসের অভাব দেখা দিয়েছে। সরকার অধিকাংশ দাবিতে একমত হলেও দুটি বিতর্কিত বিষয়ে অচলাবস্থা রয়েছে। আলোচনার অগ্রগতি হলে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement