কোরআনে উল্কাপিণ্ড ও আকাশের সুরক্ষা

Published : ২০:৩১, ২১ অক্টোবর ২০২৫
মহাকাশের এক বিস্ময়কর ও চমকপ্রদ ঘটনা হলো উল্কাবৃষ্টি। সাধারণ বিজ্ঞান এই প্রাকৃতিক ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করলেও, পবিত্র কোরআন এ বিষয়ে এক ভিন্ন ও রহস্যময় দৃষ্টিকোণ তুলে ধরে।
ধর্মীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী, উল্কাপিণ্ড কেবল একটি প্রাকৃতিক ঘটনা নয়; এটি আল্লাহর এক বিশেষ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা আসমানকে শয়তান ও জিনদের অনুপ্রবেশ থেকে সুরক্ষিত রাখে।
পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী, শয়তান বা জিনরা আকাশে উঠে আল্লাহর নির্দেশ ও সৃষ্টির তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে। তখন এই উল্কাপিণ্ডগুলো তাদের দিকে নিক্ষিপ্ত হয়, যাতে তারা কোনো তথ্য চুরি করতে না পারে। সুরা সাফফাতের (আয়াত: ৬-১০) বর্ণনায় বলা হয়েছে, আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আমি আসমানকে তারকারাজির সৌন্দর্যে সুশোভিত করেছি এবং প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান থেকে রক্ষা করেছি। তারা কিছু শুনতে পারে না, কারণ প্রতিটি দিক থেকে তাদের দিকে নিক্ষেপ করা হয়—যে শয়তান কিছু শোনার চেষ্টা করবে, তাকে পিছু তাড়া করে জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড নিক্ষেপ করা হবে।”
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নবুয়ত লাভের আগে জিনরা আকাশের তথ্য চুরি করতে পারত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ যখন আকাশে কোনো হুকুম জারি করেন, তখন সব ফেরেশতা আনুগত্যসূচক তাদের পাখা নাড়িয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে। শয়তানরা সেই তথ্য চুরি করে মিথ্যা সংযোজনসহ পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিত। (বুখারি, হাদিস: ৪৭০১)
পবিত্র কোরআনের সুরা জিনে আরও উল্লেখ রয়েছে, “আমরা আকাশ স্পর্শ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা কঠোর প্রহরী এবং উল্কাপিণ্ড দ্বারা পূর্ণ। আমরা সংবাদ শোনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে বসতাম, কিন্তু এখন যে শুনতে চাইবে, সে তার জন্য জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড পাবে।” (আয়াত: ৮-৯)
অতএব, পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিকোণ থেকে উল্কাবৃষ্টি কেবল একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়। এটি মহান আল্লাহর এক বিশেষ ব্যবস্থা, যা শয়তান ও জিনদের ঊর্ধ্বজগতে অনুপ্রবেশ ঠেকায়, আকাশের পবিত্রতা ও তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। উল্কাপিণ্ডের এই রহস্যময় কার্যকারিতা কেবল বৈজ্ঞানিক নয়, বরং আধ্যাত্মিক দিক থেকেও মহাকাশের সৌন্দর্য ও আল্লাহর সৃষ্টির গভীর রহস্য প্রকাশ করে।
বিডি/এএন