প্রথমবার আইসল্যান্ডে মশার দেখা

প্রথমবার আইসল্যান্ডে মশার দেখা ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:৩৬, ২১ অক্টোবর ২০২৫

ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ভয়াবহ প্রভাব এবার দেখা দিল উত্তর আটলান্টিকের দ্বীপদেশ আইসল্যান্ডে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশটিতে মশার সন্ধান মিলেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আইসল্যান্ড এখন ধীরে ধীরে উষ্ণতর ও কীটপতঙ্গের বসবাসের জন্য উপযোগী হয়ে উঠছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানায়, এতদিন পর্যন্ত পৃথিবীর কয়েকটি মশাবিহীন স্থানের মধ্যে অন্যতম ছিল আইসল্যান্ড। অন্যটি হলো বরফে ঢাকা অ্যান্টার্কটিকা। তবে চলতি মাসে প্রথমবারের মতো সেখানে মশা শনাক্ত হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞানীরা আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, উষ্ণায়নের কারণে খুব শিগগিরই আইসল্যান্ডে মশার প্রজনন ও টিকে থাকার পরিবেশ তৈরি হবে। দেশটিতে বহু জলাভূমি ও পুকুর থাকলেও, প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে এতদিন মশার অস্তিত্ব টেকেনি। কিন্তু দ্রুত বাড়তে থাকা তাপমাত্রা এখন সেই ভারসাম্য বদলে দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তর গোলার্ধে যেখানে উষ্ণতা বাড়ছে গড়ে এক গুণ হারে, সেখানে আইসল্যান্ডে তা বাড়ছে প্রায় চার গুণ দ্রুত গতিতে। এর ফলে হিমবাহ গলে যাচ্ছে, দক্ষিণ দিক থেকে উষ্ণ জলের মাছও এখন দেশটির উপকূলে দেখা যাচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন মশার প্রজাতিও দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে এডিশ মশার ডিম পাওয়া গেছে এবং কেন্ট অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে এশিয়ান টাইগার মশা, যা ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো মারাত্মক রোগ ছড়াতে সক্ষম।

আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেসন নিশ্চিত করেছেন যে দেশটিতে কুলিসেটা অ্যানুলাটা (Culiseta annulata) নামের ঠান্ডা সহনশীল মশা পাওয়া গেছে। তিনি জানান, কিডাফেল ও কিয়স অঞ্চলে মোট তিনটি মশা ধরা পড়ে— দুটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ। সবকটিই ‘ওয়াইন ফাঁদ’ থেকে সংগ্রহ করা হয়।

এই প্রজাতির মশা শীতকালে ঘরের বেসমেন্ট, গ্যারেজ বা খামারঘরে আশ্রয় নিয়ে টিকে থাকতে পারে, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বিজর্ন হ্যাল্টাসন প্রথম মশাগুলো দেখতে পান। তিনি বলেন, “১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় লাল ওয়াইন ফাঁদে একটি অদ্ভুত পোকা দেখি। কাছে গিয়ে বুঝতে পারি এটি মশা। পরে আরও দুটি ধরি এবং আইসল্যান্ড সায়েন্স ইনস্টিটিউটে পাঠাই।”

পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে এটি সত্যিই মশা, এবং এর মাধ্যমে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইসল্যান্ডে মশার উপস্থিতি প্রমাণিত হলো।

 সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement