ইতিহাস গড়লেন সানা তাকাইচি, জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী

ইতিহাস গড়লেন সানা তাকাইচি, জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৩:৪৭, ২১ অক্টোবর ২০২৫

অবশেষে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন সানা তাকাইচি। জাপানের সংসদীয় নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে তিনি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।

এই গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জাপানের শেয়ারবাজারেও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া জানায়, তাকাইচি প্রথম রাউন্ডে ২৩৭ ভোট পান, যা ৪৬৫ আসনের নিম্নকক্ষে রানঅফের প্রয়োজন এড়িয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। তাঁর এই জয় আসে এমন এক সময়ে, যখন শাসক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) জাপান ইনোভেশন পার্টি (জেআইপি)–এর সঙ্গে মৌখিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে জেআইপি কিছু নীতির সমর্থনে রাজি হয়েছে, যেমন—সংসদীয় আসনের সংখ্যা হ্রাস, উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা বিনামূল্যে করা এবং খাদ্য করের দুই বছরের স্থগিতাদেশ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জেআইপি হয়তো সরাসরি কেবিনেটে অংশ নেবে না, বরং সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করবে। জাপান ফোরসাইট সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা টোবিয়াস হ্যারিস বলেন, “এলডিপি–এর জনপ্রিয়তা এখনও ন্যূনতম স্তরে, তাই জোটে যোগ দেওয়াটা জেআইপি–এর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।”

তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঘোষণা জাপানের শেয়ারবাজারেও উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) নিক্কেই ২২৫ সূচক নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়, যা বিশেষজ্ঞরা ‘তাকাইচি ট্রেড’ হিসেবে উল্লেখ করছেন। এর পেছনে মূলত উন্মুক্ত অর্থনীতি ও বৃহত্তর রাজস্ব প্রণোদনা প্রত্যাশার প্রভাব রয়েছে।

তাকাইচির পথ সহজ ছিল না। ২০২৪ সালের এলডিপি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি শিগেরু ইশিবা-কে পরাজিত করতে পারেননি। তবে সেপ্টেম্বর মাসে শিনজিরো কোইজুমিকে হারিয়ে পার্টির নেতৃত্ব লাভ করেন। এছাড়া ১০ অক্টোবর কোমেইটো পার্টি হঠাৎ করে এলডিপি-এর জোট ছাড়ায়, যা ১৯৯৯ সাল থেকে চলছিল।

কঠোর রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত তাকাইচি ‘আবেনোমিকস’–এর প্রবক্তা হিসেবে খ্যাত, যা শিনজো আবে’র অর্থনৈতিক নীতির ওপর ভিত্তি করে—উন্মুক্ত অর্থনীতি, ফিসকাল খরচ এবং কাঠামোগত সংস্কারের ওপর জোর দেয়। তিনি আগে ব্যাংক অব জাপান-এর সুদের হার বৃদ্ধির পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। কূটনৈতিকভাবে তাকাইচি চীনের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং জাপানের শান্তিপ্রিয় সংবিধান সংশোধনের পক্ষে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে তাকাইচি সম্ভাব্যভাবে সাবধানী কূটনৈতিক নীতি অবলম্বন করবেন।

সানা তাকাইচির নির্বাচিত হওয়া জাপানের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি দেশের রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বের প্রসার এবং অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নতুন প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তার নেতৃত্বের ফলাফল নজরকাড়া হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

সূত্র: বিবিসি নিউজ।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement