বর্তমান ডিজিটাল যুগে টেলিভিশন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা ল্যাপটপ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। অনেকেই অভ্যাসবশত খাওয়ার সময় এসব স্ক্রিনে চোখ রাখেন।
কিন্তু চিকিৎসক ও গবেষকরা সতর্ক করেছেন, এই অভ্যাস আমাদের শরীর এবং মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অতিরিক্ত খাওয়া ও ওজন বৃদ্ধি: খাওয়ার সময় মনোযোগ স্ক্রিনের দিকে চলে গেলে কতটা খাচ্ছেন তা ঠিকভাবে বোঝা যায় না। ফলে অজান্তেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়া হয়, যা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে।
মনোযোগের অভাব: একসঙ্গে খাওয়া ও স্ক্রিন দেখার ফলে মন দুইদিকে বিভক্ত থাকে। এতে খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও তৃপ্তি পুরোপুরি উপভোগ করা যায় না।
খাওয়ার মানের অবনতি: টিভি বা ফোনে মনোযোগ থাকার কারণে অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন ফাস্টফুড, চিপস বা অন্যান্য প্রসেসড খাবার বেশি খাওয়া হয়। ফলে পুষ্টিকর খাবারের অভ্যাস নষ্ট হয়ে যায়।
হজমে সমস্যা: মনোযোগ না থাকায় হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে গ্যাস, অস্বস্তি এবং বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিপাক হার কমে যায়: বসে বসে স্ক্রিন দেখার সময় খাওয়ার ফলে শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাক হার ধীর হয়ে যায়। এর ফলে ক্যালরি পোড়ার হার কমে গিয়ে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে।
তৃপ্তি না পাওয়া: খাওয়ার সময় মনোযোগ বিভক্ত থাকার কারণে খাবার শেষ হওয়ার পরও মনে হতে পারে, ঠিকমতো খাওয়া হয়নি—যা মানসিক অশান্তির কারণ হতে পারে।
পারিবারিক বন্ধন ক্ষতিগ্রস্ত হয়: একসঙ্গে বসে খাওয়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও সম্পর্ক মজবুত করে। কিন্তু সবাই যদি সেই সময় ফোন বা টিভিতে ব্যস্ত থাকে, তবে পারিবারিক আলাপ-আলোচনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়।
উল্লেখযোগ্য, খাওয়ার সময় ফোন বা টিভি দেখা আজকাল অনেকের দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, খাবারের সময় অন্তত স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা উচিত। এতে খাবারের স্বাদ এবং পুষ্টি ভালোভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হয়, হজম ঠিক থাকে এবং পরিবারের সঙ্গে মানসম্মত সময় কাটানো যায়।