ভিআইপি টয়লেট ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণে চীন সফরে তিন সরকারি কর্মকর্তা

ভিআইপি টয়লেট ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণে চীন সফরে তিন সরকারি কর্মকর্তা ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৫:১৯, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নতুন পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ ভিআইপি টয়লেট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে অংশ নিতে চীনে যাচ্ছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের তিন কর্মকর্তা।

স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে (জিও) তাদের বিদেশ সফরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

১৪ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফারুক হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকির হোসেন আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে সাত দিনের জন্য চীন সফরে যাবেন।

এই সফরের সমস্ত ব্যয় বহন করবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শ্যাংডং কিউয়ানবাই ইন্টেলিজেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড।

যদিও সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা দায়িত্বের অংশ হিসেবেই এই প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন, তবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় দীর্ঘদিন ধরে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে আসছে—সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ কোনো ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে করা যাবে না।

মোবাইল টয়লেট ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি পরিচালনার প্রশিক্ষণের নামে এমন বিদেশ সফর নিয়ে ইতোমধ্যেই তীব্র সমালোচনা উঠেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো ঠিকাদার বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ স্পষ্টতই অনৈতিক এবং এতে স্বার্থসংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হয়।

অতীতে কেবল স্থানীয় সরকার বিভাগ নয়, বিদ্যুৎ, পরিকল্পনা কমিশন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), আইএমইডি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩৫ জন কর্মকর্তা একইভাবে বিদেশ সফর করেছেন।

এ ধরনের সফর সাধারণত নতুন যন্ত্রপাতি, ট্রেইলার, চেইন ডেজার বা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণ কিংবা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপটেন্স টেস্টের নামে অনুমোদন দেওয়া হয়ে থাকে।

বিধি অনুযায়ী, জরুরি জাতীয় স্বার্থ ছাড়া কর্মকর্তাদের একসঙ্গে বিদেশ সফরে যাওয়া যাবে না এবং সরকারি ব্যয়ে ভ্রমণ হলে তা হতে হবে একেবারেই ন্যূনতম ও অপরিহার্য। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, উৎপাদক বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খরচে প্রশিক্ষণ বা পরিদর্শনের নামে কর্মকর্তারা বিদেশ ভ্রমণ করছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর কমাতে নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এর ব্যত্যয় ঘটছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে ভ্রমণ অনৈতিক এবং কর্মকর্তাদের পক্ষপাতদুষ্ট করে তোলে। এতে মানসম্মত পণ্য ও সেবা নিশ্চিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।”

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, “বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এর ব্যত্যয় সরাসরি চাকরিবিধি লঙ্ঘন।”

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement