শিক্ষা উপদেষ্টার মন্তব্য: এইচএসসির ফলাফল বাস্তবভিত্তিক

Published : ১৩:১৬, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ২০২৫ সালের ফলাফলে এবার পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় শিক্ষা মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার (সি আর আবরার) বলেন, এ ফলাফলের পেছনের কারণ বিশ্লেষণ করতে আগামী সপ্তাহে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বিস্তারিত ডাটাভিত্তিক পর্যালোচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে ফলাফল প্রকাশের পর আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এবারের ফলাফল কিছুটা অস্বস্তিকর হলেও বাস্তবভিত্তিক। তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই ধরনের ফলাফলের দায় এড়াতে পারে না। এবারের ফলাফলের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে,
শুধুমাত্র পাসের হার ও জিপিএ-৫-এর সংখ্যাকেই সন্তুষ্টির মানদণ্ড হিসেবে ধরা ঠিক নয়। আগে দেশে এমন একটি প্রবণতা তৈরি হয়েছিল যেখানে কেবল সংখ্যা বড় সত্য হিসেবে বিবেচিত হতো, ফলে শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া অনেকাংশে আড়াল হয়ে যেত। তিনি বলেন, এবার থেকে আমরা চাই শিক্ষার ফলাফল বাস্তবতার প্রতিফলন হোক এবং ন্যায্য মূল্যায়ন নিশ্চিত করা হোক।
উপদেষ্টা জানান, বিশেষ করে সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে শিক্ষকদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যেন ন্যায্যতা বজায় থাকে।
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন, আর ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন ফেল করেছেন। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের ৭৭.৭৮ শতাংশের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম।
বিভিন্ন বোর্ডে পাসের হার এভাবে ছড়িয়েছে: ঢাকা বোর্ড ৬৪.৬২%, রাজশাহী ৫৯.৪০%, কুমিল্লা ৪৮.৮৬%, যশোর ৫০.২০%, চট্টগ্রাম ৫২.৫৭%, বরিশাল ৬২.৫৭%, সিলেট ৫১.৮৬%, দিনাজপুর ৫৭.৪৯%, ময়মনসিংহ ৫১.৫৪%, মাদরাসা বোর্ড ৭৫.৬১% এবং কারিগরি বোর্ড ৬২.৬৭%।
এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন, যা গত বছরের ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। পাসের হার ও জিপিএ-৫—উভয় ক্ষেত্রেই মেয়েরা এগিয়ে রয়েছেন।
তবে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে, আর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। এবারের পরীক্ষায় ২০২টি প্রতিষ্ঠান থেকে সকল শিক্ষার্থী ফেল করেছেন, আর ৩৪৫টি প্রতিষ্ঠানে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সংক্ষেপে, এবারের ফলাফল শিক্ষা ক্ষেত্রে বাস্তবতার পরিচয় দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে শিক্ষার মান ও ন্যায্যতা বজায় রাখতে নতুন দিকনির্দেশনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
বিডি/এএন