রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট পেল নিজস্ব নিয়োগবিধি

রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট পেল নিজস্ব নিয়োগবিধি ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:৩৫, ২১ অক্টোবর ২০২৫

অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিজস্ব নিয়োগবিধি পেল নিবন্ধন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (২০ অক্টোবর) আইন মন্ত্রণালয় ‘নিবন্ধন অধিদপ্তর (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ শিরোনামে সরকারি গেজেট প্রকাশ করে।

এর মাধ্যমে স্বাধীনতার পর ৫৪ বছর পর প্রথমবারের মতো রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট পেল নিজস্ব নিয়োগ কাঠামো—যা এই অধিদপ্তরের ইতিহাসে এক বড় মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বহু বছর ধরে অপেক্ষায় থাকা হাজারো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো, একই সঙ্গে সমাধান হতে যাচ্ছে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক নানা জটিলতা।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে সাব-রেজিস্ট্রাররা পদোন্নতির মাধ্যমে শীর্ষ পদ আইজিআর (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশন) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন। এর ফলে কর্মকর্তা পর্যায়ের পেশাগত মর্যাদা বাড়ার পাশাপাশি পদোন্নতির পথও আরও সুসংগঠিত হলো।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (আইন নম্বর ৫৭)–এর ধারা ৫৯(১)-এর ক্ষমতাবলে এবং সংবিধানের ১৪০(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে—
১. শিরোনাম: এই বিধিমালার নাম হবে নিবন্ধন অধিদপ্তর (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫।
২. সংজ্ঞা: এখানে ‘কমিশন’ বলতে বোঝানো হয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন; ‘জিপিএ’ মানে Grade Point Average; ‘সিজিপিএ’ মানে Cumulative Grade Point Average; ‘নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ’ বলতে সরকার বা সরকারের অনুমোদিত কর্মকর্তা বোঝানো হয়েছে; ‘তফশিল’ বলতে এ বিধিমালার তফশিল অংশকে বোঝানো হয়েছে; এবং ‘স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়’ বলতে বোঝানো হয়েছে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে।

বিধিমালা কার্যকর হওয়ার ফলে নিবন্ধন অধিদপ্তরের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। অ্যাডিশনাল আইজিআর ও ডিআইজিআর নামে নতুন দুটি পদ সৃষ্টি হচ্ছে, এবং আইআরও/এআইজিআর পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭টি। প্রতিটি পদের সরাসরি নিয়োগ, পদোন্নতি এবং যোগ্যতার শর্তাবলি তফসিলে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা আছে।

রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের ইতিহাস বেশ পুরোনো। ব্রিটিশ আমলে ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে দালিলিক প্রথার সূচনা হয়, যা থেকে রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থার ভিত্তি গড়ে ওঠে। পরে ১৯০৮ সালে কার্যকর হয় রেজিস্ট্রেশন আইন, এবং স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে প্রণীত হয় দ্য গেজেটেড অফিসার্স (রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট) রিক্রুটমেন্ট রুলস—যা ১৯৯৬ সালে সংশোধন করা হয়।

তবে এর পর থেকে নিজস্ব নিয়োগবিধি প্রণয়নের দাবি থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বহু বছর ধরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন, প্রস্তাব ও আলোচনায় ছিলেন। অবশেষে ২০২১ সালে এ নিয়োগবিধি প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ২০২৫ সালে এসে তা আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তব রূপ পেল।

এই বিধিমালা কার্যকর হওয়ার ফলে নিবন্ধন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি শুধু প্রশাসনিক সাফল্য নয়—এটি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ও দক্ষতা বৃদ্ধির এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement