যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কমানোর বিনিময়ে নীতিগত ছাড় দিচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কমানোর বিনিময়ে নীতিগত ছাড় দিচ্ছে

The Business Daily

Published : ১০:৫৯, ৪ আগস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত কিছু পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তবে এই শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে বাংলাদেশকে নানা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দিতে হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই ছাড়ের আওতায় দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে, যার সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ পারস্পরিক বাণিজ্যচুক্তি’।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সব দাবি বাংলাদেশ মেনে নেয়নি। তবে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে উভয়পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে।

সূত্র মতে, চুক্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমাতে পারে। এর জন্য আইন সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা শিথিল, অনাপত্তিপত্র প্রদানে সহজতা, এবং অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বাংলাদেশ।

চুক্তির আওতায় সামরিক ও বেসামরিক উড়োজাহাজ, যন্ত্রাংশ, জ্বালানি তেল, এলএনজি, গম, তুলা, ও ভোজ্যতেলসহ কিছু পণ্যের আমদানি বাড়ানো হবে। এলএনজি আমদানির জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বিষয়েও আলোচনা চলছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা যন্ত্রপাতির আমদানিতে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদন গ্রহণ করবে এবং ইলেকট্রনিক সনদ বৈধ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। হার্ড কপি বা সত্যায়িত সনদ আবশ্যক হবে না।

বাংলাদেশ মার্কিন দুগ্ধজাত, মাংসজাত ও উদ্ভিজ্জ পণ্যের নিরাপত্তাব্যবস্থার স্বীকৃতি দেবে এবং এসব পণ্যের আমদানির অনুমতি দেবে। বার্ড ফ্লু সংক্রান্ত বিধিমালায় বিশ্ব পশু স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা হবে।

চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশে অবৈধ রপ্তানি প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ তদন্তে রাজি হয়েছে। পাশাপাশি আইনি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত আইন ও বিশ্লেষণ অনলাইনে প্রকাশ এবং জনমত গ্রহণের সুযোগ রাখার বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব সংক্রান্ত বার্ন কনভেনশন, প্যারিস কনভেনশন, মাদ্রিদ প্রটোকলসহ প্রায় এক ডজন আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুমোদন ও বাস্তবায়নের বিষয়ে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ।

চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ছাড় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে, যাতে জাতীয় স্বার্থ ও আর্থিক ভারসাম্য রক্ষা পায়।

BD/S

শেয়ার করুনঃ
Advertisement